গণহত্যার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হয়ে মিয়ানমারের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন বিশ্ব শান্তির জন্য নোবেলজয়ী মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচি। রাখাইনে সহিংসতার কথা স্বীকার করলেও একে কোনোভাবেই একে গণহত্যা বলা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বুধবার আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে অং সান সু চি দাবি করেছেন, গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় রাখাইনের একটি খণ্ডিত ও বিভ্রান্তিকর চিত্র হাজির করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে সুচির দাবি, রাখাইনে কোনও গণহত্যা ঘটেনি, সেখানে আরসার মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে লড়াই করছে সে দেশের সেনাবাহিনী।
রাখাইনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় সেনাবাহিনীর হাতে নিরীহ লোকজন নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী সামরিক আদালতে অপরাধী সেনা সদস্যদের বিচার হচ্ছে। বেশ কয়েকটি ঘটনায় সেনা সদস্যদের সাজা পাওয়ার কথাও আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে জানান তিনি।
কিন্তু এর জন্য আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বিচার হওয়া অযৌক্তিক বলে দাবি করেন সুচি।
সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় অপরাধীদের দ্রুত বিচার চলছে জানিয়ে সুচি বলেন, আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ হলে দোষী সেনা সদস্যদের বিচার প্রক্রিয়া থমকে যাবে। আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়ার চেয়ে যেকোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিচার প্রক্রিয়া সব সময় দ্রুত সম্পন্ন হয়।
তিন দিনের এ শুনানির তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার সাক্ষ্য গ্রহণ হবে। এজন্য বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের তিন প্রতিনিধি হেগে গেছেন। যারা আদালতে নিজেদের উপর হওয়া নিপীড়নের বর্ণনা দেবেন।
দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর আইসিজে তে এটি তৃতীয় গণহত্যা মামলার শুনানি।
একদিন আগে রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধে মিয়ানমারকে নির্দেশ দিতে আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অভিযোগকারী আফ্রিকান দেশ গাম্বিয়ার বিচারবিষয়ক মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু।
২০১৭ সালের আগস্টের শেষ দিকে শুরু হওয়া রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় শুরু হলে সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
এবার ধর্ষণ, গণহত্যা ও নিপীড়নের দায়ে বৌদ্ধসংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিকে আন্তর্জাতিক আদালতের মুখোমুখি করেছে আফ্রিকার এই ছোট্ট দেশটি।