সৌদি প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না। তবে ইরান যদি শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় তবে শক্তি ও দৃঢ়তার সঙ্গে জবাব দেওয়া হবে।’
এর আগে গত শনিবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন না এই অঞ্চলে সহসা যুদ্ধ দেখা দেবে। কেননা, তেহরান কারো সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াতে চায় না। কোনও দেশ এমন কোনও বিভ্রমও সৃষ্টি করতে পারবে না যা ইরানকে যুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করায়।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর সৌদি প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তার সর্বশেষ বক্তব্য উপসাগরীয় অঞ্চলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিই প্রতিফলিত।
ইরানের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে এরইমধ্যে উপসাগরীয় অঞ্চলে বিমান চলাচলে সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার মার্কিন ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএএ) প্রতি এ ব্যাপারে সতর্কতা জারি করা হয়। ইরাকের রাজধানী বাগদাদে নিয়োজিত দূতাবাসের ৫০ কর্মকর্তাকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
রবিবার ভোরে রিয়াদে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা কোনোভাবেই যুদ্ধ চাই না। কিন্তু একই সঙ্গে আমরা ইরানকে তার শত্রুতাপূর্ণ নীতি চালিয়ে যেতে দেব না যা আমাদের জন্য ক্ষতিকর হয়।’ তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তি ও স্থিতিশীলতা চাই।’
সাম্প্রতিক কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে হঠাৎ করেই মধ্যরাতের পর আল-জুবায়ের ওই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। ওই হামলার প্রতি ইঙ্গিত করে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘গত কয়েক দশকে সৌদি আরবে এসব সন্ত্রাসী হামলার পেছনে ইরানের ভূমিকা রয়েছে। ইরান সরকার ‘এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বা নিরাপত্তা চায় না’।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা ইরান সমর্থিত। গত কয়েক বছরে সৌদি আরবে ২০০টিরও বেশি মিসাইল হামলা চালিয়েছে তারা। গত সপ্তাহে সৌদি পাম্প স্টেশনে ড্রোন হামলার পেছনেও ছিল হুতি। ওই ড্রোন ইরান সরবরাহ করেছিল বলে দাবি করেন তিনি।
অ্যারামকো কম্পানির পাম্পিং স্টেশনের ওপর হামলার কারণে দেশটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব-পশ্চিম পাইপলাইন সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। তবে তা উপসাগরীয় অঞ্চলে আরও উত্তেজনা বাড়িয়েছে। ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা কঠোর করেছে। একইসঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসীদের সমর্থন দেওয়া বন্ধ করারও দাবি করেছে দেশটি।
সৌদি পাইপলাইনটি আবারও চালু করা হয়েছে। তবে একইসঙ্গে আল-জুবাইর বলেছেন, ‘আমরা আমাদের হাত গুটিয়ে বসে থাকবো না।’ তিনি বলেন, বল এখন ইরানের কোর্টে। সুতরাং, ইরানকেই এখন নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে যাবে।’