গত ১৪ ফেব্রুয়ারিতে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার জবাবে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে ভারতীয় বিমান বাহিনীর হামলায় অন্তত ২০০-৩০০ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিজয় কেশব গোখেল বলেছেন, ‘বেসামরিক এবং সতর্কতামূলক’ পদক্ষেপ হিসেবে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের বালাকোটে জয়েশ-ই-মোহাম্মদের একটি প্রধান ঘাঁটিতে অভিযান চালানো হয়েছে।
আর ১৯৭১ সালের পর পাকিস্তানের আকাশে ঢুকে এটাই ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রথম অভিযান বলে জানিয়েছে ভারতের সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও টাইমস অফ ইন্ডিয়া।
১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ী পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে ঢুকে আকাশপথে হামলা পরিচালনা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ওই সময় ভারত নিজেদের আকাশসীমায় থেকে যুদ্ধবিমান মিরাজ-২০০০ ব্যবহার করে হামলা করেছিল কার্গিল পাহাড়ে।
বিজয় কেশব গোখলে আরো বলেন, আমাদের কাছে নির্ভরযোগ্য তথ্য ছিল যে, জইশ-ই-মোহাম্মদের সদস্যরা ভারতে ফের হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে জন্যই জইশ-ই-মোহাম্মদের বৃহত্তম এই ঘাঁটিতে অভিযান চালানো জরুরি হয়ে পড়েছিল।
ভারতের এই পররাষ্ট্রসন্ত্রী বলেন, মঙ্গলবার ভোরের এই অভিযানে জইশ-ই-মোহাম্মদের অনেক জঙ্গি, প্রশিক্ষক এবং সিনিয়র কমান্ডার নিহত হয়েছে। এই জঙ্গি ঘাঁটিটি চালাতো জইশের প্রধান মাসুদ আজহারের শ্যালক মাওলানা ইউসুফ আজাদ।
ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই বলছে, ভারতীয় বিমানবাহিনীর মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমানের অভিযানে নিয়ন্ত্রণরেখার আশপাশে বেশ কিছু জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে।
তবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর দাবি করেছেন, ভারতীয় সামরিক বিমান তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করার পর পাকিস্তানি জঙ্গি বিমানের ‘তাড়া খেয়ে পালানোর’ আগে বালাকোটের কাছে ‘বোমা ফেলে’ গেছে।
এএনআই বলছে, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমানের একটি স্কোয়াড্রনের হানায় নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বড় জঙ্গি ঘাঁটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ১২টি মিরাজ বিমান এই অভিযানে অংশ নিয়েছিল। অভিযানে জঙ্গি ঘাঁটির উপর ফেলা হয়েছে এক হাজার কেজি ওজনের বোমা।
ভারতের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় টুইট করে কাশ্মীরে অভিযানের জন্য ভারতীয় বিমান বাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।