নড়াইলের সাবেক এমপি, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি বঙ্গবন্ধুর সহচর আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার আব্দুল হাফিজের বাড়ি যাবার শত বছরের পুরনো রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল। দীর্ঘ ৬ বছর জেলা পরিষদ, পৌরসভাসহ নানা জায়গায় ঘুরেও রাস্তাটির কূল-কিনারা করতে পারছেন না তিনি। এমনকি জেলা পরিষদ থেকে বার বার নোটিশ দিয়ে দায় সারলেও রাস্তা উদ্ধারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল পৌর এলাকার কাঁচা বাজারের পাশে জেলা পরিষদের জগদীশ ট্যাংক নামক পুকুর পাড়ে ৩টি রাস্তা ব্যবহার হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। পুকুর পাড়ের পূর্বদিকের ৫৩৯ দাগের রাস্তাটি কাঁচা বাজারের সাথে সংযুক্ত হয়ে খন্দকার হাফিজের বাড়ির ভেতরে ঢুকেছে। সর্বশেষ ২০১৩ সালে এলাকার নার্গিস বেগম নিজ বাড়ি তৈরির সময় রাস্তাটি জোর করে বন্ধ করে ১৯২ বর্গফুট জায়গা দখল করে গেট নির্মাণ করেন এবং অবশিষ্ট অংশে গাছপালা লাগিয়ে রাস্তাটি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেন।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ খন্দকার হাফিজের পরিবারের লোকেরা ২০১৩ সাল থেকে জেলা পরিষদ, নড়াইল পৌরসভায় একাধিকবার রাস্তা উদ্ধারে আবেদন করলেও জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দেয়নি। রাস্তা উদ্ধার করতে না পেরে ২০১৬ সালে দুদকের গণশুনানীতে নালিশ করে ভুক্তভোগী পরিবারটি। পরে জেলা পরিষদের তৎকালীন প্রধান নির্বাহীর ওপর এ ঘটনা তদন্তের দ্বায়িত্ব দেয় দুদক। কিছুদিন ঘুরে পরে অজ্ঞাত কারণে থেমে যান ওই কর্মকর্তা।
ভুক্তভোগী পরিবারের খোন্দকার হাফিজের ছেলে খোন্দকার মাকসুদ হাসান কল্যান জানান, আমাদের বাড়িতে ঢোকার এই রাস্তাটি প্রায় একশ বছরের। রাস্তাটি দখল করে দুটি পরিবার বাড়ির দেয়াল তুলে আমাদের চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। কিছু বলতে গেলে এরা সরকারি কর্মকর্তা ও এলাকার হোতাদের ডেকে নিয়ে আসে। ভয়ে কিছু বলার উপায় থাকে না।
নড়াইল জেলা পরিষদের পৌর এলাকার সদস্য বিপ্লব বিশ্বাস বিলো জানান, একাধিক বার নোটিশ করার পরও রাস্তা দখলকারী পরিবার গুরুত্ব দেয়নি। এখন উচ্ছেদে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া ছাড়া কোনো উপায় নাই।
নড়াইল পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর বিশ্বাস ওই রাস্তা পৌরসভার দাবি করে জানান, রাস্তা দখলের ব্যাপারে আমার জানা নাই। তবে যদি এ ধরনের কেউ করে থাকে তাহলে অবশ্যই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা পরিষদের জায়গা দখলকারী অভিযুক্ত নার্গিস পারভীন জানান, আমি এখানে বাড়ি করার আগেই অন্যরা রাস্তা দখল করেছে। জেলা পরিষদ নোটিশ করেছে। জমি মেপে যদি দেখি এটা তাদের, তবে সরে যাবো। রাস্তার জায়গায় কতগুলো গাছ লাগানো আছে মাটি ঠেকানোর জন্য সেগুলো কেটে ফেলব।
নড়াইল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এড.সোহরাব হোসেন বিশ্বাস বলেন, ওই রাস্তা উদ্ধারে প্রায় ১০ বার নোটিশ করা হয়েছে। এই মুহূর্তে আমাদের সার্ভেয়ার নাই। সার্ভেয়ার আসলে আমরা জমিটি মেপে খুব শিগগিরই ওই স্থাপনা ভেঙে রাস্তাটি মুক্ত করবো।