মুন্সীগঞ্জের মেঘনা নদীতে তেলবাহী ট্যাংকারের ধাক্কায় মাটিবোঝাই ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ সময় ট্রলারটিতে ৩৩ জন শ্রমিক ও মাঝি-মাল্লা ছিল। ১৪ জন সাঁতরে তীরে উঠলেও এখনও অন্তত ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত মঙ্গবার ভোররাতে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার সীমান্তবর্তী কালিপুরা এলাকার মেঘনায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। আহতদের বরাত দিয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাস্থলটি চাঁদপুরের মতলব উপজেলা ও মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার উপজেলা সীমান্তবর্তী মেঘনা নদীতে। এখনও পর্যন্ত ট্রলারটির কোনো সন্ধান মেলেনি। এমনকি নিখোঁজ ব্যক্তিদেরও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এর পূর্বে মঙ্গলবার এমন ঘটনা জানজানি হলেও এটি নিছক গুজবেই থেকে যায়।
ওসি জানায়, মঙ্গলবার ভোররাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ট্রলারে মাটি নিয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বক্তাবলী এলাকায় যাচ্ছিলেন ২৫-৩০ জন শ্রমিক। ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে ট্রলারটি কালিয়াপুর নামক স্থানে পৌঁছার পর বিপরীত দিক থেকে আসা একটি তেলবাহী ট্যাংকার ট্রলারে ধাক্কা দেয়। এতে ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে অন্যরা সাঁতারে প্রাণে বাঁচলেও এখনও ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন দাবি করেছে উদ্ধার হওয়া শ্রমিকরা।
নিখোঁজ ২৯ জনের মধ্যে ১৮ জনের নাম-পরিচয় জানা গেছে। ১৮ জনের মধ্যে ১৭ জনের বাড়ি পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় এবং একজনের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উলস্নাপাড়ায়।
ওসি হারুনুর রশিদ আরো জানায়, মঙ্গলবার পাবনার ভাঙ্গুরা থানায় ওসির মাধ্যমে ট্রলারডুবির ঘটনা অবগত হয়ে মেঘনায় নৌ-পুলিশ দিয়ে সন্ধান চালায়। কিন্তু নৌ-পুলিশ এ রকম কোনো ঘটনার তথ্য মিলাতে পারেনি। বুধবার সকাল থেকে নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ জানান, উদ্ধার হওয়া শ্রমিকদের মাধ্যমে বিষয়টি আবগত হয়ে বুধবার সকাল হতে মেঘনায় উদ্ধার অভিযান জোরদার করা হয়েছে। নিখোঁজদের সন্ধানে পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও বিআইডাব্লিউটিএর সদস্যরা কাজ করছে। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ কোনো সন্ধ্যান মেলাতে পারেনি উদ্ধারকর্মীরা।
নিখোঁজ ১৯ জনের মধ্যে ১৮ জনের পরিচয় মিলেছে, তারা হলেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের মুমালা গ্রামের গোলাই প্রামাণিকের ছেলে সোলেমান হোসেন, জব্বার ফকিরের ছেলে আলিফ হোসেন ও মোস্তফা ফকির, গোলবার হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন ১, আব্দুল মজিদের ছেলে জাহিদ হোসেন, নূর ইসলামের ছেলে মানিক হোসেন, ছায়দার আলীর ছেলে তুহিন হোসেন, আলতাব হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন ২, লয়ান ফকিরের ছেলে রফিকুল ইসলাম, দাসমরিচ গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে ওমর আলী ও মান্নাফ আলী, তোজিম মোল্লার ছেলে মোশারফ হোসেন, আয়ান প্রামাণিকের ছেলে ইসমাইল হোসেন, সমাজ আলীর ছেলে রুহুল আমিন, মাদারবাড়িয়া গ্রামের আজগর আলীর ছেলে আজাদ হোসেন, চণ্ডিপুর গ্রামের আমির খান ও আব্দুল লতিফের ছেলে হাচেন আলী এবং উল্লাপাড়া উপজেলার গজাইল গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রহমত আলী।