সপ্তাহখানেক ধরে বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে চাল। বিভিন্ন ধরনের চাল কেজিতে দুই-তিন টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। চালের এই বর্ধিত দামের মধ্যে বাজারে কমতে শুরু করেছে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ভোগ্যপণ্য; পেঁয়াজ ও ডিমের দাম।
দেশি পেঁয়াজের ভরা মৌসুমে এক সপ্তাহ আগে কোনো কারণ ছাড়াই বেড়ে যায় আমদানি করা পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের বাড়তি দাম আবার কমতে শুরু করেছে। প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৮-৩০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে বেড়ে এই পেঁয়াজের দাম হয়েছিল ৩৫ টাকা। তবে বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ২৫-৩০ টাকা কেজিতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করতে দেখা গেছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে ফার্মগেটে তেজগাঁও কলেজের সামনের কাঁচাবাজারের বিক্রেতা আনিস মিয়া কালের কণ্ঠকে জানান, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ২৫ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৩০ টাকা দরে বিক্রি করছেন তাঁরা।
রামপুরা, কারওয়ান বাজার, গুদারাঘাট কাঁচাবাজারসহ বেশ কটি বাজার ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার বিশ্লেষণের তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে ৯ শতাংশেরও বেশি। যদিও এই এক মাসের মধ্যে কেবল গত সপ্তাহেই বেড়েছিল আমদানি করা পেঁয়াজের দাম।
পেঁয়াজের পাশাপাশি বাজারে দাম কমেছে ডিমের। প্রতি হালি ফার্মের ডিমের দাম দুই টাকা কমে ৩৩-৩৪ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। চলতি মাসের শুরুতে এই ডিম বিক্রি হয়েছে ৩৬ টাকায়। হঠাৎ করেই বেড়ে গিয়েছিল ডিমের দাম। গেল সপ্তাহে ব্যবসায়ীরা দাবি করেছিলেন—শীতে ডিমের চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি উত্পাদন কম হওয়ায় দাম বেড়েছে।
গুদারাঘাটের মুদি দোকানি আরিফুল জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় ফার্মের মুরগির ডিম হালিতে দুই টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। তবে যারা এক সঙ্গে বেশি ডিম কিনছে; তাদের ক্ষেত্রে ৩২-৩৩ টাকা হালি রাখা হচ্ছে।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মাসের শুরুতে অস্থির হয়ে ওঠে নিত্যপণ্যের বাজার। চাল, ডিম, পেঁয়াজ এই নিত্যপণ্যগুলোর দাম হঠাৎ বেড়ে যায়। বাজারে পেঁয়াজ, ডিমের দাম কমলেও এখনো কমেনি চালের দাম। গতকাল বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা দোকানে কেজি প্রতি দুই-চার টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল।
কারওয়ান বাজারে কথা হয় ক্রেতা সামসুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মৌসুমে কী করে
চালের দাম বাড়ে, এটা বোধগম্য নয়। মাত্রই আমন ধান কাটা শেষ হয়েছে। বাজারেও চালের ঘাটতি নেই। চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়টির ওপর সরকারের নজর দেয়ো উচিত।’
এক সপ্তাহ আগে মাঝারি মানের যে সরু চাল কারওয়ান বাজার থেকে কেজি ৫২ টাকায় কেনা যেত, গতকাল তা ৫৪ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ টাকায়। ভালো মানের সরু চাল কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬২ টাকা।
তবে বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে সব ধরনের সবজি, মাছ ও মাংসের দাম।