একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ উৎকণ্ঠায় রয়েছে। আর বিএনপি রয়েছে ধোঁয়াশায়। এ অবস্থায় ভোটাররা বিভ্রান্তিতে পড়েছে। কে, কোন দলের প্রার্থী—তা চূড়ান্তভাবে এখনই বলা যাচ্ছে না।
মেঘনা উপকূলীয় এ আসনে বিএনপির ঘোষিত একক প্রার্থী এ বি এম আশরাফ উদ্দিন নিজান মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য ও রামগতি উপজেলা বিএনপির সভাপতি। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সঙ্গে বিএনপির জোটগত বন্ধন অটুট রাখতে বিএনপি নেতা আশরাফ উদ্দিন নিজান মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। আবদুর রব ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা।
এদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আবদুল্লাহ তাঁর স্ত্রী মাহমুদা বেগমও স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। একই কাজ করেছেন আ স ম আবদুর রবের স্ত্রী জেএসডির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি তানিয়া রব। বুধবার (২৮ নভেম্বর) শেষ দিনে সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে তাঁরা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জোটগত কারণে লক্ষ্মীপুর-৪ আসনটি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের হাতছাড়া হতে যাচ্ছে। এতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের কপালে হাত পড়েছে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব কিছু ঠিক থাকলে জোটগত কারণে নৌকা নিয়ে বিকল্পধারার আবদুল মান্নান আর ধানের শীষ নিয়ে জেএসডির আবদুর রব নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যদিও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মনোনয়ন দাখিল করেছেন, দলের সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাহার করতে হতে পারে। এ ছাড়া জোট ভাবনায় বিএনপির একক প্রার্থী আশরাফ উদ্দিন নিজান মনোনয়ন দাখিল করেনি।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, এ আসনে ১০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাঁরা হলেন বিকল্পধারা মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, তাঁর স্ত্রী মাহমুদা বেগম, জেএসডির আ স ম আবদুর রব, তাঁর স্ত্রী তানিয়া রব, কেন্দ্রীয় তাঁতী দলের সহসভাপতি আবদুল মতিন চৌধুরী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির আব্দুর রাজ্জাক চৌধুরী, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের খালেদ সাইফুল্লাহ, বাসদের মিলন কৃষ্ণ মণ্ডল ও ইসলামী আন্দোলনের শরীফুল ইসলাম।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপকমিটির সহসম্পাদক আবদুজ্জাহের সাজু বলেন, আবদুর রব জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের চূড়ান্ত প্রার্থী হচ্ছেন, তা প্রায় নিশ্চিত। এ জন্য ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট বাড়াতে তাঁর স্ত্রীও প্রার্থী হন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়ার ভাবনায় স্ত্রীকে প্রার্থী করিয়েছেন। ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার ও স্বামীর পক্ষে এজেন্ট বাড়ানোর জন্য তাঁরা এ কৌশল নিয়েছেন।
জানতে চাইলে কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম নুরুল আমিন রাজু বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনিই আমাদের একক প্রার্থী। চূড়ান্ত প্রার্থী নিয়ে দল কী সিদ্ধান্ত দেয়, তা নিয়ে নেতাকর্মীরা উৎকণ্ঠায় রয়েছে।’
এ ব্যাপারে রামগতি উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ বি এম আশরাফ উদ্দিন মিজান বলেন, ‘বিএনপি আমাকে একক মনোনয়ন দিয়েছে। দলের সিদ্ধান্তের কারণে আমি তা দাখিল করিনি। আমাদের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। শিগগিরই ধোঁয়াশা কেটে যাবে।’