কান্নার সঙ্গী হিসেবে অনলাইনে হ্যান্ডসাম পুরুষের সন্ধান করছে জাপানী নারীরা। ডিভোর্সের একাকিত্ব কিংবা যেকোনো যন্ত্রণায় চোখ দিয়ে পানি বের হওয়ার আগেই অনলাইনে হ্যান্ডসাম ছেলের খোঁজ করছেন তারা।
বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, জাপানে এখন এই রেওয়াজ চালু হয়েছে। একা কান্নার চেয়ে সুদর্শন পুরুষের সামনে কান্নায় মনের ভার লাঘব হয় বলে মনে করেন জাপানিদের একাংশ।
জাপানি উদ্যোক্তা হিরোকি তেরাই এই নতুন ব্যবসা খুলে বসেছেন। মেয়েরা কাঁদলে ঝকঝকে চেহারার সুপুরুষ পৌঁছে যাবে তাদের কাছে। কাজ? সান্ত্বনা দেওয়া, যত্ন করে চোখের জল মোছানো।
তাদের নামও দিয়েছেন তিনি, ‘হ্যান্ডসাম উইপিং বয়’।জাপানি পরিভাষায় এই পদ্ধতির নাম ‘রুই-কাৎসু’। কাঁদতে চাইলে অনলাইনে বুক করতে হবে নিজের নাম ও কাঁদার সময়। ব্যস! এবার সেই ঠিকানায় পৌঁছে যাবেন সুদর্শন যুবক।
কান্নার সময় খুব প্রিয় মানুষ সামনে থাকলে আবেগের গতি ও প্রকাশ বিশুদ্ধ হয়, কান্না প্রকাশের ঠিকঠাক মাধ্যম পেলে তা অনেক স্বাস্থ্যকর হয়-দুনিয়াজুড়ে এমন দর্শনে বিশ্বাস করেন অনেকেই। আর এই বিশ্বাসকে মূলধন করেই এই পদ্ধতি চালু করেছেন হিরোকি তেরাই।
তার মতে, এই ভাবনার কথা প্রথম মাথায় আসে জাপানি দম্পতিদের ডিভোর্সের সময়ের কথা ভেবে। সেখানে কিছু পুরুষ সপ্তাহ ধরে নানা কাজ ও ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকায় মেয়েরাই ডিভোর্সের আবেদন করে।
তখন সংসার ভেঙে যাওয়ার কষ্ট তাদের উভয়কেই পীড়া দেয়। কিন্তু সে দুঃখ ভুলে থাকার কায়দা দু’জনের দু’রকম। স্বভাবজাত কারণে সাধারণত পুরুষরা সারাদিন নানা প্রমোদ, বিলাসিতা ও ঘুমিয়ে বা পরের সপ্তাহে কাজের পরিকল্পনা করে কাটিয়ে দেন। সেক্ষেত্রে মেয়েরাই কান্নাকাটি করেন বেশি।
তা দেখেই এই ব্যবসার কথা মাথায় আসে তেরাইয়ের। তিনি ভেবে দেখেন, তাদের সামলাতে যদি সামনে কোনও বিপরীত লিঙ্গের মানুষ থাকেন, তাহলে তারা অনেকটা ভরসা পাবেন, কান্নায় সমব্যথী হওয়ার জন্য মনের মতো মানুষ পাবেন।এতে একজন দুঃখী মানুষ সঙ্গীও পাবেন, আবার মেয়েদের মনের চাপও কমবে।
কিন্তু সুদর্শন পুরুষই কেন? তেরাইয়ের মতে, সামনের মানুষ বদলে গেলে একই ঘটনায় মানুষের আচরণও অনেকটা বদলে যায়। সামনে আকর্ষক কেউ থাকলে মানুষ কোথাও জীবনের প্রতি একটু বেশি আশাবাদী হয়। তাই সুন্দর মুখকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
তেরাই এই অভিনব ব্যবসা শুরু করে ফলও পান হাতেনাতে। অল্প দিনের মধ্যেই তার এই ভাবনার কথা ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে ও বিপুল লাভবান হন তিনি। শুধু তা-ই নয়, তার এই ভাবনাকে মূলধন করে ছবিও বানিয়ে ফেলেছেন দ্যারিয়েল থমস। তার স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি ‘ক্রাইং উইথ দ্য হ্যান্ডসাম ম্যান’-এ তিনি এই তত্ত্বের ব্যাখ্যা ও বিশ্বাসকে তুলে ধরেছেন।