শাকিব খান অভিনীত ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ছবি ‘নাকাব’। ছবিটি সেখানে মুক্তি পেয়েছে গত ২১ সেপ্টেম্বর। একই দিনে সাফটা চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে মুক্তির কথা থাকলেও প্রথমে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি মেলেনি। পরে অনুমতি পেয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীসহ সারাদেশে শতাধিক হলে মুক্তি পায় ছবিটি। আমদানি করে ছবিটি বাংলাদেশে মুক্তি দিয়েছে জাজ মাল্টিমিডিয়া।
ছবি মুক্তির আগে প্রযোজক-পরিবেশকের পক্ষ থেকে এই ছবিকে নানা বিশেষণ দিয়ে বিশেষায়িত করা হলেও বাস্তবে এর দেখা মেলেনি। ছবিটি বাংলাদেশে একদমই ব্যবসা করতে পারেনি বলে জানিয়েছে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। এর আগে কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গেও ছবিটির মন্দার খবর জানা যায়। রাজধানীর বলাকা সিনেমা হলে শুক্রবার ব্যবসা কিছুটা হলেও শনিবার থেকে লোক সমাগম কম দেখা যায়। শ্যামলী সিনেমা হলে ব্যবসা মন্দা গেছে।
শ্যামলি সিনেমার হাউজ ম্যানেজার আহসানুল্লাহ হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা আশা করেছিলাম ছবিটি ভালো চলবে। কিন্তু আশানুরূপ ব্যবসা করতে পারেনি। আমাদের এখানে প্রায় সব ছবিই ভালো চলে। তবে এই ছবিটি কেন চললো না বুঝলাম না। আমাদের এখানে পরিবার নিয়ে লোকজন ছবি দেখতে আসে। ফ্যামিলি ড্রামা, পারিবারিক গল্পের ছবিগুল ভালো চলে। নাকাব ছবিটির ব্যবসা সম্পর্কে বলতে বলতে বলবো ‘খেয়ে দেয়ে সমান সমান।’ অর্থাৎ লাভও হয়নি, লোকসানও হয়নি।
যশোরের মনিহার সিনেমার ব্যবস্থাপক তোফাজ্জল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, চরম খারাপ অবস্থা। নাকাব নিয়ে এসেছিলাম ভেবেছিলাম ঈদের পরে একটা ভালো ব্যবসা হবে কিন্তু একেবারে ধরাশয়ী। কোনো দর্শক আসছে না হলে। এমনকী শুক্রবার দর্শক আসে, সেদিনও দর্শক নেই। খুব বাজে একটা সময় গেল। শোগুলোতে কেমন দর্শক হচ্ছে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দর্শকের সংখ্যা আসলে বলার মতো না।
বগুড়ার সোনিয়া সিনেমা হলের, হল অপারেটর সাইফুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, শাকিব খানের ছবি যেহেতু আমরা মনে করছিলাম ভালো চলবে। সেইভাবে ভালো চলেনি। ব্যবসা আশা করছিলাম যা তা হয়নি। দেখি পরের সপ্তাহে কেমন চলে। প্রথম সপ্তাহে ব্যবসা ভালো করেনি, দ্বিতীয় সপ্তাহে কেন চালাবেন? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা দুই সপ্তাহের জন্য এককালীন টাকা দিয়ে ছবিটা এনেছি।
চলচ্চিত্রের ব্যবসা সম্পর্কে সবচেয়ে সমন্বিতভাবে পাওয়া যায় বুকিং এজেন্টদের নিকট। কেননা বুকিং এজেন্ট সারাদেশের সিনেমা হলগুলোতে ছবি সরবরাহ করে।
বাংলাদেশ বুকিং এজেন্ট সমিতির সভাপতি সারওয়ার আলি ভুঁইয়া (দিপু) কালের কণ্ঠকে বলেন, শাকিবের সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে খারাপ ব্যবসা করা ছবি নাকাব। শুক্রবার-শনিবার চোখ বন্ধ করে ছবির বিজনেস ভালো হবার কথা। কিন্তু শুক্র-শনিবার ‘নাকাব’ এর মতো বাজে ব্যবসা অন্যান্য সিনেমাতেও হয় না। ছবির মান ও গল্প ভালো ভালো না। দর্শক আপনার আমার মতো বোকা না যে টাকা খরচ করে এমন ছবি দেখবে।
তিনি বলেন, প্রথম সপ্তাহের পুরোটা দিন নাকাবের ব্যবসা মন্দা গিয়েছে। বাধ্য হয়ে দ্বিতীয় সপ্তাহেও অনেক হলে এই ছবি চলবে। কারণ দুই সপ্তাহের জন্যই বুকিং নিয়েছে তারা। তবে দর্শকেরা সামনে হয়তো ভালও ছবি পেতে যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে ‘নায়ক’ ছবিটা ভালো হয়েছে। দেখা যাক। আমরা চাই হলে দর্শক আসুক। দর্শককে ঠকানো ঠিক হবে না।