আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আজকে একটা বিষয় ভালো লাগছে যে বামপন্থীরা একসুরে কথা বলছে। আর তা হচ্ছে—সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে আমরা নেই। এই উচ্চারণ অনেকেই করেছেন। তাহলে এই উচ্চারণ যাঁরা করেছেন, আসুন না আমরা মিনিমাম পয়েন্টে ম্যাক্সিমাম ইউনিটি গড়ে ফেলি! অসুবিধাটা কোথায়?’
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সাম্যবাদী দলের ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও—বামপন্থীরা এই স্লোগানে কেন ঐক্যবদ্ধ হতে পারে না? এটা তাদের দুর্বল করে দিচ্ছে। অনেক সময় অহেতুক অকারণেও ভাঙন লক্ষ করি। নেতৃত্বের জন্য ভাঙন লক্ষ করি। বামপন্থীদের ত্যাগের যে ইতিহাস, তার সঙ্গে এর কোনো মিল নেই। ভুল করতে করতে খুব ক্ষতি হয়ে গেছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন আটদলীয় জোটের অনেকের সঙ্গে আমরা একসঙ্গে ছাত্র রাজনীতি করেছি। তাদের আদর্শের প্রতি আমার কোনো অশ্রদ্ধা নেই। এখানে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু—এই প্রশ্নে আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমরাও জাতীয় ঐক্য চাই। আর তা সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে। আমরা জাতীয় ঐক্য চাই স্বাধীনতার শত্রুদের বিরুদ্ধে, নষ্ট রাজনীতির বিরুদ্ধে, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। আমরা জাতীয় ঐক্য চাই মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির সঙ্গে। এ দেশের জন্মের চেতনা নিয়েই আমরা জাতীয় ঐক্য চাই।’
নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইতিহাস দেখুন, ফেরিতে প্লেট চুরির জন্য আমাদের নেতাদের
বিরুদ্ধে মামলা করেছিল কারা। কত মামলা নিয়ে আমরা নির্বাচনে গিয়েছি। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী বাড়ি ছাড়া। সাধু সাজে কারা! কত মামলায় তারা আমাদের জর্জরিত করেছে! অন্যায়ভাবে মামলা হোক তা আমরা চাই না। এখন যে মামলা হয়েছে, পুলিশ বলছে তারা আন্দোলনের নামে নাশকতার ছক আঁকছে। পুলিশের কাছে তথ্য আছে, তারা গোপনে ২০১৪ সালের মতো সন্ত্রাসী তৎপরতার পরিকল্পনা তৈরি করছে। এ ধরনের অভিযোগে পুলিশ কারো বিরুদ্ধে মামলা করলে সেটা কি হয়রানিমূলক মামলা হবে?’
বিএনপির নেতাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নিরপরাধ হলে আদালতে যান। আদালতে গিয়ে ফয়সালা করুন, স্বাধীনতা আছে। খালেদা জিয়ার ৩০ মামলার কি জামিন হয়নি?’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা বাঙালির আস্থার নির্ভরযোগ্য ঠিকানা। তাই যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন এবং বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসেন, তাঁরা যেন সামান্য রাজনৈতিক ভুল বোঝাবুঝি অথবা অভিমানের বশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে দুর্বল না করেন।’
আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া।