২০১৮ সালের ধরিত্রী জাতীয় সম্মাননা পাচ্ছেন বিশিষ্ট মৃত্তিকা ও পরিবেশবিজ্ঞানী, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হক। প্রকৃতি ও পরিবেশ আন্দোলনের পথিকৃৎ হিসেবে এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় এ সম্মাননায় ভূষিত হচ্ছেন তিনি।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা ও বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ জাতীয় সম্মাননা দিয়ে আসছে ধরিত্রী বাংলাদেশ।
আগামী শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অধ্যাপক এস এম ইমামুল হকের হাতে এ সম্মাননা তুলে দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। এতে আরো উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক ড. অজয় রায়, অধ্যাপক মাহফুজা খানম, অধ্যাপক ড. ডালেম চন্দ্র বর্মণ, সংস্কৃতিজন সৈয়দ হাসান ইমাম, আলী যাকের, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব নওয়াজীশ আলী খান, আবেদ খান, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর এন আই খান প্রমুখ।
দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ ও প্রকৃতি নিয়ে কাজ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. এস এম ইমামুল হক। মাটি থেকে পানির মাধ্যমে খাদ্যচক্রে আর্সেনিকের সংক্রমণ এবং প্রকোপ নিয়ে তাঁর গবেষণা দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ও এই গবেষণার স্বীকৃতি দিয়েছে।
ইমামুল হকের ৩১৫টিরও বেশি গবেষণা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকাবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন অধ্যাপক ড. এস এম ইমামুল হক। ১৯৭৩ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন তিনি। ১৯৮০ সালে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অবস্থিত এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এআইটি) থেকে অ্যাগ্রিকালচারাল সয়েল অ্যান্ড ওয়াটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এমএসসি, ফ্রান্সের ন্যান্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে ডক্টর অব ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি অর্জন করেন পোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপ।
ইমামুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান, শহীদুল্লাহ হলের প্রভোস্ট, জীববিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন, বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও গভর্নিং বডির সদস্য, রেডিও টুডে মিডিয়া একাডেমির অনারারি ডিনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশ সরকারের কৃষি, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক ও উপদেষ্টা পদেও ছিলেন ইমামুল হক। বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলাদেশ মৃত্তিকাবিজ্ঞান সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের আজীবন সদস্যসহ একাধিক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সঙ্গেও যুক্ত।
শিক্ষা ও গবেষণায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অধ্যাপক ড. এস এম ইমামুল হক এর আগে পেয়েছেন বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সেস গোল্ড মেডেল, বাংলাদেশ ইউজিসি অ্যাওয়ার্ড ২০০৭, বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক ২০০৮, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা পদক ২০০৯, সয়েল সায়েন্টিস্ট অব দ্য ইয়ার ২০১০-সহ বেশ কিছু পুরস্কার।