এশিয়া কাপে স্কোয়াডে যুক্ত হলেন মুমিনুল হক। নাজমুল হোসেন শান্ত অনুশীলন করতে গিয়ে কাল ডান হাতে চোট পেয়েছেন। তাকে নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা থাকায় মুমিনুলের নাম অনুমোদন করা হয়েছে।
আজ দুপুরে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বলেন, ‘শান্তর (নাজমুল) চোট নিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন এখনো পাইনি। তবে মুমিনুলের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আমরা বিসিবি সভাপতির অনুমোদন নিয়ে রেখেছি।’
উল্লেখ্য, আয়ারল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছিলেন মুমিনুল হক। পাঁচ ম্যাচে ৭৪.২৫ গড়ে ১০০ স্ট্রাইক রেটে ২৯৭ রান করে ওয়ানডে সিরিজে সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি। এমন চোখজুড়ানো পারফরম্যান্সের পরও এশিয়া কাপের দলে রাখা হয়নি তাকে। অবশেষে তিনি যুক্ত হয়েছেন দলে। তবে শান্তর বদলে তাকে নেয়া হয়েছে কিনা তা জানানো হয়নি।
আরো পড়ুন : লিটন পারবেন তো?
জাতীয় দলের অস্বস্তির স্থান একটিই ‘ওপেনিং’। এ স্থানে তামিম একটি স্থানে সুনামের সাথে থাকলে অন্য স্থানটি নিয়ে ওই অস্বস্তি। স্থায়ী হতে পারছেন না কেউই। অনেক চেষ্টা ও অনেককে দিয়ে চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি কিছুই। এবার ওই স্থানের জন্য বিবেচনা করা হয়েছে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাসকে। ফোরিডায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ টি-২০ ম্যাচে ম্যাচ সেরা এক পারফরম্যান্স করে নির্বাচকদের বিবেচনায় চলে এসেছেন। অ্যাটাকিং ব্যাটিংয়ে সক্ষম এ ক্রিকেটারকে তামিমের স্থায়ী পার্টনার হিসেবেই চান নির্বাচকেরা। লিটন পারবেন তো?
১০ টেস্ট, ১২ ওয়ানডে ও ১৫ টি-২০ খেলা লিটনের সেঞ্চুরি নেই। হাফ সেঞ্চুরি আছে চারটি। তার তিনটি টেস্টে, টি-২০তে একটি। ওয়ানডেতে নেই। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে একটি ২৭৪ রানের ইনিংস রয়েছে। সেঞ্চুরি সেখানে অবশ্য আছে। ৫২ ম্যাচে ১২ ও হাফ সেঞ্চুরি ২০। তবু তার ওপরই যত আস্থা। লিটন নিজেও বেশ আত্মবিশ্বাসী।
বুধবার মিরপুর শেরেবাংলায় অনুশীলনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আসলেই এটা আমার জন্য দারুণ একটা সুযোগ (ওপেনার হিসেবে দলে স্থান করে নেয়া)। আমি ওয়ানডে (২২ অক্টোবর ২০১৭ শেষ ম্যাচ) থেকে অনেক দিনই বাইরে। যদি আমি দলে চান্স পাই তাহলে আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করব।’
এশিয়া কাপের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘গ্রুপ পর্বে আমাদের দুটি ম্যাচ। ফলে দ্বিতীয় পর্বে যেতে দুটি ম্যাচই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা ছাড়া আমি তো দলের সাথেই। ফলে একটু হয়তো ব্যতিক্রম (ওপেন), কিন্তু সেটা পারফর্ম করার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা হবে বলে মনে হয় না।’
ওপেনিংয়ে সুযোগটা মূলত পাচ্ছেন তিনি সৌম্য সরকারের ব্যর্থতায়। বারবার ওপেন করতে নেমে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এরপর আস্থা রাখা হয়েছিল এনামুল হক বিজয়ের ওপর। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দল ভালো করলেও বিজয়ের ব্যাটে আস্থার অভাব ছিল না।
এতে করে লিটন দাসের ওই সুযোগ। লিটন শেষ টি-২০ ম্যাচে ৩১ বলে করেছিলেন ৬২ রান। যে ম্যাচে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় লাভ করে এবং সিরিজও জয় করে। লিটনের ওই ম্যাচের অ্যাটাকিং পারফরম্যান্স মুগ্ধ করেছে সবাইকে। ভবিষ্যতেও তিনি ওই ধারাতেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে দলে টিকে থাকতে হলে অবশ্যই রান করতে হবে। আর আমি যদি রান করতে চাই, আমাকে কিছু শট খেলতেই হবে। তা ছাড়া একেকজনের ব্যাটিং ধারা একেক রকমের। তবে আমি অ্যাটাকিংই খেলে থাকি। আর ওই ধারাই কন্টিনিউ করব।’
লিটন জাতীয় দলে স্থান করে নেয়ার জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই পরিশ্রম করে আসছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটেও ভালো করছেন তিনি। নিজেকে মেলে ধরার যে স্থানগুলো, সেখানে তিনি সুনাম অর্জন করেছেন। এর আগে ওপেনিংয়ে একবারই তিনি সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে বেশির ভাগ খেলেন তিনি ওয়ান ডাউনে। কিন্তু কোথাও সেভাবে সুবিধা করতে পারেননি। ওপেনিং ছাড়া অন্য স্থানে এখন সেট ব্যাটসম্যান রয়েছেন। বাকি শুধু ওপেনিং! লিটন বলেন, ‘আমি জানি আউট হওয়ার জন্য একটি বলই যথেষ্ট। তবে আমার পরিশ্রমটা শট খেলাকে কেন্দ্র করেই।’
নিজেকে কোনো পর্যায়ের মনে করেন না। তিনি শুধু জানেন ভালো করতে হবে। পরিশ্রম করতে হবে। বলেন, ‘বড় মাপের ক্রিকেটাররা বড় ইনিংস খেলতে পারেন যদি তারা শুরুটা ভালো করতে পারেন। আমি এখনো ওই পর্যায়ের ক্রিকেটার নই। ফলে এ কারণেই আমি বলব আমি বড় ইনিংস খেলার যোগ্যতা হয়তো রাখি না।’
তিনি আরো বলেন, ‘তবে আমি এমন কিছু করতে চাই যা নিজের জন্য, দলের জন্য ভালো হয়। আপাতত ওই টার্গেটে থাকলেই আমি হয়তো বড় ইনিংস খেলতে সক্ষম হবো।’