নাশকতার তিন মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে হাইকোর্টের দেয়া তিন মাসের জামিনের রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এতে আপাতত ফখরুলের মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। সোমবার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।এর আগে নাশকতার তিন মামলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত চেয়ে গত ২৬ নভেম্বর আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ৩০ নভেম্বর শুনানির এ দিন ধার্য করেন। আজ নির্ধারিত দিনে শুনানি শেষে ফখুরুলের জামিন বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।মামলায় মির্জা ফখরুলের পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন ও রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি করেন। এর আগে গত ২৪ নভেম্বর মঙ্গলবার তার স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করে রাজধানীর পল্টন থানায় পুলিশ বাদী হয়ে করা এই তিন মামলায় হাইকোর্ট তিন মাসের জামিন মঞ্জুর করেন। বৃহস্পতিবার এই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে আবেদন জানান।এই তিন মামলায় মির্জা ফখরুলের স্থায়ী জামিন প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর গত ১১ নভেম্বর শুনানি শেষ হয়। ১৬ নভেম্বর আদেশের জন্য দিন ধার্য থাকলেও ফখরুলের মেডিকেল রিপোর্ট না আসায় ওই দিন হাইকোর্ট আদেশ দেয়া থেকে বিরত থাকেন। পরে মেডিকেল রিপোর্ট দেখে ২৪ নভেম্বর হাইকোর্ট তার জামিন মঞ্জুর করেন।গত ২১ জুন এই তিন মামলায় হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফখরুলের জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে এসব মামলায় তাকে কেন স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। পরে হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন জানায়। আপিল বিভাগ এই তিন মামলায় তাকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন। আত্মসমর্পণ করতে মির্জা ফখরুলকে আপিল বিভাগের বেঁধে দেয়া সময় ২ নভেম্বর শেষ হয়। ওইদিন আপিল বিভাগ তার আত্মসমর্পণের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন নাকচ করেন। পাশাপাশি দুই সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টের রুল শুনানি করতে নির্দেশ দেন।গত ৩ নভেম্বর ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে মির্জা ফখরুল আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। আদালত ওই আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অন্যদিকে জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল শুনানির দিন নির্ধারণের জন্য গত ৫ নভেম্বর আবেদন করেন ফখরুলের আইনজীবীরা। পরে ১১ নভেম্বর ওই রুলের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে গত ৬ জানুয়ারি গ্রেফতার হন মির্জা ফখরুল। নাশকতার ৭ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এর মধ্যে পল্টন থানায় গাড়ি পোড়ানো, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের তিন মামলায় গত ১৬ এপ্রিল হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের জামিন পান মির্জা ফখরুল। এরপর পল্টন থানার দুটি ও মতিঝিল থানার এক মামলায় ১৮ জুন পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। এসব আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে গেলে সেখানেও তার জামিন বহাল থাকে।
ফখরুলের জামিন বহাল, মুক্তিতে বাধা নেই
Share!