Saturday , 6 July 2024
সংবাদ শিরোনাম

সেই তাবরিজেই প্রেসিডেন্ট রাইসির শেষকৃত্য হবে

ইরানের সংবাদমাধ্যম তাসনিম জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির শেষকৃত্য আগামীকাল মঙ্গলবার তাবরিজে অনুষ্ঠিত হবে। রবিবার তাবরিজের উদ্দেশেই রওনা করেছিলেন রাইসি ও তার সফরসঙ্গীরা। সংবাদমাধ্যম তাসনিমের সঙ্গে দেশটির ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কোরের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে তাসনিম আরো জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি তার নিহত সফরসঙ্গীদের শেষকৃত্যও হবে সেখানে।

তার আগে মরদেহগুলো তাবরিজের ফরেনসিক বিভাগে রাখা হবে।এর আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এক আনুষ্ঠানিক বিৃবতিতে প্রেসিডেন্ট রাইসির স্মরণে পাঁচ দিনের শোক ঘোষণা করেছেন।

 

অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল রাইসির বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটি কুয়াশায় ঢাকা পশ্চিম পর্বত অঞ্চলে খুঁজে পাওয়ার পর সোমবার তিনি মৃত বলে নিশ্চিত হয় দেশটি। এতে ইসলামী প্রজাতন্ত্রে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান তার ‘প্রিয় বন্ধু’ প্রেসিডেন্ট রাইসির প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। এক্সে একটি বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি ইরান ও বিস্তৃত অঞ্চলে রাইসির ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা’ প্রত্যক্ষ করেছেন।

 

পাকিস্তানের সম্প্রতি নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন, রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ‘পাকিস্তানের ভালো বন্ধু’ ছিলেন।

আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ বলেছেন, তারা ‘ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান ও এর জনগণের দুঃখে অংশীদার’।

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের পর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নেতা মাহমুদ আব্বাস একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছেন, তিনি ‘ভাতৃপ্রতিম ইরানি জনগণের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা ও সহানুভূতি’ প্রেরণ করেছেন।

ইরানের উপসাগরীয় কয়েকটি মিত্রর একটি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ইরানি জনগণের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। ইরানের প্রতিবেশী ইরাকও ‘ভাতৃপ্রতিম ইরানি জনগণের সঙ্গে সংহতি’ প্রকাশ করেছে।

ইরান থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এক্সে লিখেছেন, তিনি ‘একজন অনুকরণীয় ব্যক্তি, বিশ্বের একজন অসাধারণ নেতাকে বিদায় জানাতে’ গভীরভাবে দুঃখিত।

বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটি সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে
ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ছিল বেল ২১২।

কপ্টারটির বয়স সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এই সংস্করণটি কানাডার সামরিক বাহিনীর জন্য ১৯৬০ সালে তৈরি করা হয়েছিল।মার্কিন কম্পানি বেল হেলিকপ্টারগুলো নির্মাণ করে। বিশ্বজুড়ে অনেক সরকারি-বেসরকারি সংস্থা সেগুলো ব্যবহার করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং থাইল্যান্ড পুলিশের মতো বাহিনীগুলোতেও এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।

ফ্লাইটগ্লোবালের ২০২৪ সালের ওয়ার্ল্ড এয়ার ফোর্সেস ডিরেক্টরি অনুযায়ী, ইরানের নৌ ও বিমানবাহিনীর কাছে মোট ১০টি বেল হেলিকপ্টার রয়েছে। তবে দেশটির সরকার কতটি পরিচালনা করে তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।

যেকোনো উদ্দেশ্যেই এই এয়ারক্র্যাফটগুলোকে ব্যবহার করা যায়। মানুষ বা পণ্য পরিবহন তো বটেই অস্ত্র সজ্জিত করে যুদ্ধের জন্যও এগুলো উপযোগী।

রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা জানায়, প্রেসিডেন্টকে বহনকারী কপ্টারে ছয়জন যাত্রী এবং তিনজন ক্রু ছিলেন।

ফ্লাইট সেফটি ফাউন্ডেশন নামে একটি অলাভজনক সংস্থার মতে, বেল ২১২-এর সর্বশেষ মারাত্মক দুর্ঘটনাটি ঘটে ২০২৩ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। দেশটির উপকূলে উড্ডয়নের সময় বিধ্বস্ত হয় ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি হেলিকপ্টার।

ইরানে এর আগে ২০১৮ সালে সর্বশেষ একটি বেল ২১২ দুর্ঘটনায় শিকার হয়। একজন হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে উদ্ধারে কাজ করছিল সেটি।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top