একের পর এক মিসাইল নিক্ষেপ করেই চলেছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) ফের দুইটি স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে দেশটি। পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির রাজধানীর একটি বিমানবন্দর থেকে মিসাইল দু’টি নিক্ষেপ করা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী ও জাপানের বরাত দিয়ে সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। সর্বশেষ ঘটনাটিসহ চলতি মাসেই চার দফায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালালো পূর্ব এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর এই দেশটি।
জাপনের কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, সোমবার সকালে নতুন করে একটি ক্ষেণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ংয়ের নিক্ষিপ্ত এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ব্যালিস্টিক মিসাইল হতে পারে বলে ধারণা করছে তারা।
অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীও জানিয়েছে যে, সোমবার সকালে ‘অজ্ঞাত ক্ষেপণাস্ত্র’ নিক্ষেপ করেছে পিয়ংইয়ং। পরে সেই ক্ষেপণাস্ত্রটি উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলে গিয়ে পড়ে। সেসময় তাৎক্ষণিকভাবে উভয় দেশ আর কোনো তথ্য দেয়নি।
পরে এক বিবৃতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ জানিয়েছে, সোমবার নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র দু’টি স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল (এসআরবিএম)-র সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং পিয়ংইয়ংয়ের সুনান এয়ারফিল্ড থেকে নিক্ষেপ করা হয়।
এর আগে ২০১৭ সালে মধ্যমপাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল (আইআরবিএম) ক্ষেপণাস্ত্র হোয়াসং-১২ পরীক্ষামূলকভাবে নিক্ষেপের কাজে একই এয়ারফিল্ড ব্যবহার করেছিল উত্তর কোরিয়া।
এদিকে সোমবারের এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে উত্তর কোরিয়ার নিন্দা জানিয়েছে জাপান। দেশটির চিফ কেবিনেট সেক্রেটারি হিরোকাজু মাতসুনো জানান, এই ধরনের পরীক্ষা আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
গত ৫ জানুয়ারি বছরের প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা হিসেবে পারমাণবিক শক্তিধর এই দেশটি নিজের পূর্ব উপকূলে হাইপারসনিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছিল। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই দেশটি দ্বিতীয়বারের মতো শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে।
এরপর গত ১৪ জানুয়ারি উত্তর কোরিয়া ফের অজ্ঞাত মিসাইল নিক্ষেপ করে বলে জানায় দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের কর্মকর্তারা। এক সপ্তাহেরও বেশি কিছু সময়ের মধ্যে সেটি ছিল পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির তৃতীয় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ। আর এর তিনদিনের মাথায় নিজের পূর্ব উপকূলে একসঙ্গে দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল দেশটি।
গত বছরের অক্টোবর মাসের শুরুতে বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এর আগে শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম পরীক্ষা চালায় দেশটি। এছাড়া গত সেপ্টেম্বর মাসে পৃথকভাবে ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোরও অভিযোগ ওঠে পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে।
উত্তর কোরিয়ার মতো অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত দেশ কীভাবে একের পর এক এমন পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে বহু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যদিও একের পর এক পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার জন্য উত্তর কোরিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ।