দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য কভিড-১৯-এর টিকা নিশ্চিত করতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যে টিকা আমদানির পাশাপাশি দেশেও টিকা তৈরির প্রচেষ্টা চলছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা টিকা সংগ্রহে বিভিন্ন দেশে জোরালো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনা মহামারি মোকাবেলায় দেশের মানুষকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেও বারবার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
টিকা নিয়ে সরকারের সমালোচনাকারীদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যাঁদের আগে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তাঁরা এখন দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েই সরকারের সমালোচনা শুরু করে দিয়েছেন। একে-ওকে গালি দিচ্ছেন। করোনার ভ্যাকসিন আমদানির প্রচেষ্টার পাশাপাশি দেশেই তৈরির প্রচেষ্টা চলছে। ভ্যাকসিন তৈরির জন্য যা যা করার সবই করা হবে। আগে দেখুন সরকার কী করে, তারপর সমালোচনা করুন।’ তিনি গত ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনাসভায় এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা শুরুর পর থেকেই ভ্যাকসিন নিয়ে যেসব দেশ গবেষণা করেছে, তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে সরকার যোগাযোগ রেখেছে। অনেক বড় বড় দেশ যখন করোনার ভ্যাকসিন আনতে পারেনি, আমরা তখন ভ্যাকসিন এনে মানুষকে বিনা মূল্যে দিয়েছি। দেশের প্রত্যেক মানুষ যাতে ভ্যাকসিনের আওতায় আসে, ভ্যাকসিন পায়, আমরা সেই উদ্যোগ নেব।’
স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্বই এখন এই করোনার কারণে বিপর্যস্ত। করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় জনগণকে সচেতন থাকতে হবে। সবার প্রতি অনুরোধ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলুন, বাইরে গেলে মাস্ক পরুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। যেখানে লকডাউন দেওয়া হয়েছে, সেখানে লকডাউন মানতে হবে, ঘরে থাকতে হবে। সবাই যদি সতর্ক থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, ইনশাআল্লাহ আমরা করোনার এই সংকটও মোকাবেলা করতে পারব।’ কভিড-১৯-এর টিকা সংগ্রহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। তিনি বলেন, ‘টিকার জন্য আমরা যোগাযোগ করে চলেছি। এরই মধ্যে আমরা কয়েকটি দেশের সঙ্গে কথা বলেছি, প্রত্যাশা করছি দ্রুত আমরা টিকা পাব। আমরা কিন্তু প্রতিদিনই অন্ততপক্ষে একেকটা দেশ বা কম্পানির সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছি। একই সঙ্গে আমাদের বাংলাদেশেও উৎপাদন করার চেষ্টা করছি।’
টিকা কেনার জন্য ১৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে জানিয়ে মুখ্য সচিব বলেন, ‘আমরা কিন্তু কারো দয়া চাই না। বাংলাদেশ সরকার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিন্তু সব সময় বলছেন, আমাদের ফ্রি দরকার নেই। আমরা টাকা দিয়ে কিনব। যেখানে পাওয়া যায় সেখান থেকে কেনা হবে এবং আমরা কিন্তু অনেক দূর এগিয়েছি।’
টিকার সংকট প্রসঙ্গে ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, “বর্তমানে ভ্যাকসিন মার্কেটটা কিন্তু ‘সেলারস মার্কেট’, কেউ কিন্তু বিক্রি করছে না। আমরা পৃথিবীর সব জায়গায় চেষ্টা করেছি প্রথম দিন থেকে, তখন আমাদের কাছে যে ‘অপশনটা’ ছিল সেটা আমরা গ্রহণ করেছি। এখনো পর্যন্ত আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখতে পারবেন কম দামে কিন্তু আমরা পেয়েছি।”
তিনি বলেন, ‘এখন একটা কথা হচ্ছে যে আমরা সোর্স করিনি কেন? আপনাদের কিভাবে বোঝাব আমরা সোর্সিংয়ের জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা ইউরোপ বা চীনসহ সব দেশে প্রতিনিয়ত আমাদের রাষ্ট্রদূতরা যোগাযোগ করে চলেছেন।’