করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে নিরবচ্ছিন্ন ব্যাংকিং ও পরিশোধ সেবা অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সব তফসিলি ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ও ওষুধ ক্রয়ের ক্ষেত্রে এমএফএসের ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি (পি-টু-পি) লেনদেনে (যে কোনো চ্যানেলে) কোনো চার্জ কাটা যাবে না এবং এ লেনদেনের সর্বোচ্চ মাসিক সীমা ৭৫ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকায় উন্নীত করা যাচ্ছে।
এমএফএস লেনদেনের ক্ষেত্রে দিনে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকার ক্যাশআউট সম্পূর্ণ চার্জবিহীন রাখতে হবে। দেশের অভ্যন্তরে শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও ওষুধ ক্রয়ের ক্ষেত্রে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় বা বিনিময় ফেরত পাওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে দৈনিক সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা ও মাসিক সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার লেনদেন সীমা প্রযোজ্য হবে।
একই দিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেকটি প্রজ্ঞাপনে করোনা পরিস্থিতিতে ঋণগ্রহীতাদের বিশেষ সুবিধা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে– আগামী জুন পর্যন্ত কোনো ঋণগ্রহীতা ঋণ শোধ না করলেও ঋণের শ্রেণিমানে কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না।
বৃহস্পতিবার দেশের সব তফসিলি ব্যাংককে এ নির্দেশ দিয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে বর্তমানে কোনো ঋণগ্রহীতা যদি ৩০ জুন পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হন, তা হলে তাকে খেলাপি করা যাবে না। তবে যদি কোনো খেলাপি ঋণগ্রহীতা এই সময়ের মধ্যে ঋণ শোধ করেন, তাকে নিয়মিত ঋণগ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোসাভাইরাসের কারণে ব্যবসাবাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ‘সম্প্রতি করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ববাণিজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের ব্যবসাবাণিজ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আমদানি-রফতানিসহ দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের কারণে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। ফলে অনেক ঋণগ্রহীতাই সময়মতো ঋণের অর্থ পরিশোধে সক্ষম হবেন না বলে ধারণা করা যাচ্ছে। এতে চলমান ব্যবসাবাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার এবং দেশে সামগ্রিক কর্মসংস্থান বাধাগ্রস্ত হবে— এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এ বছরের ১ জানুয়ারিতে ঋণের শ্রেণিমান যা ছিল, আগামী ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত ওই মানেই রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর চেয়ে বিরূপ মানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না।’
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৯ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করার কথা জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে। এ নির্দেশনা অনতিবিলম্বে কার্যকর করা হবে।