Friday , 1 November 2024
সংবাদ শিরোনাম

‘জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগান

‘জয় বাংলা’কে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রায়টি কার্যকর করতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। গতকাল বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ  এ রায় দেন। আগামী তিন মাসের মধ্যে রায়টি কার্যকর করে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী বশির আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সাংবাদিকদের বলেন, রায়ে আদালত বলেছেন, বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে জয় বাংলা। জাতীয় দিবসগুলোয় উপযুক্ত ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদাধিকারী ও রাষ্ট্রীয় সব কর্মকর্তা সরকারি অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান উচ্চারণ করবেন।

সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যাসেম্বলি শেষে ছাত্র-শিক্ষকেরা যাতে ‘জয় বাংলা’  স্লোগান উচ্চারণ করেন।
রায়ে বলা হয়েছে, প্রত্যেক রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে ‘জয় বাংলা’ বলতে হবে। একইসঙ্গে প্রত্যেক স্কুলে এসেম্বিলি শেষে জয় বাংলা বলতে হবে। আগামী ৩ মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আদালত আরও বলেন, সামনে ১৬ই ডিসেম্বর বা পরবর্তী সময়ে যেসব জাতীয় দিবস আছে, প্রতিটি দিবসে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বস্তরের প্রত্যেক দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে ভাষণ বা বক্তব্যের শুরু ও শেষে জয় বাংলা শ্লোগান দিতে হবে। আদালত তার রায়ে আদালত বলেন, শুধু দেশেই না। একাত্তরে যখন মহান মুক্তিযুদ্ধ চলে তখন দেশে -বিদেশে একটাই স্লোগান ছিল ‘জয় বাংলা’। এছাড়া কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীরা এক হয়ে ‘জয় বাংলা’ বলে স্লোগান দিয়েছে। এমনকি আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে নিয়ে গিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে গুলি করার আগ মুহূর্তেও এদেশের মুক্তিযোদ্ধারা ‘জয় বাংলা’ বলে স্লোগান দিয়েছে। সর্বোপরি এদেশের ধর্মনিরপেক্ষ স্লোগানই হচ্ছে জয় বাংলা।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, জয় বাংলা জাতীয় ঐক্যের স্লোগান। জয় বাংলা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয় স্লোগান এবং জয় বাংলা ৭ই মার্চের ভাষণের সঙ্গে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আবেদনকারী সংবিধানের ৩ ও ৪ নম্বর অনুচ্ছেদের ধারাবাহিকতায় জাতীয় স্লোগান হিসেবে জয় বাংলাকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করেছেন। কিন্তু এটা এই আদালতের এখতিয়ারবর্হিভূত। কারণ কোনো আইন প্রণয়ন এবং সংবিধান সংশোধন করার একমাত্র অধিকার জাতীয় সংসদের। তবে রাষ্ট্রপক্ষ এ রুলের সমর্থনে হলফনামা দিয়েছে উল্লেখ করে রায়ে আদালত বলেছে, আইনসচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান করায় একমত পোষণ করেছেন। তবে আদালত তাদের পর্যবেক্ষণে বলেছে, রাষ্ট্র চাইলে, আইন বিভাগ যদি মনে করে সংবিধান সংশোধন করে জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান করে আইনগত কার্যকারিতা প্রদান করা সম্ভব।
উল্লেখ্য, ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় শ্লোগান ঘোষণা চেয়ে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. বশির আহমেদ। ঐ বছরের ৪ঠা ডিসেম্বর হাইকোর্ট রিটের ওপর রুল জারি করে। রুলে ‘জয় বাংলা’কে কেন জাতীয় শ্লোগান ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। চলতি বছর ঐ রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেলসহ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী রিটকারি আইনজীবী ড. বশির আহমেদ, আইনজীবী শফিক আহমেদ, আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হ?ুমায়ূন, আইনজীবী আব্দুল মতিন খসরু ও আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় শ্লোগান করার পক্ষে তাদের মত তুলে ধরেন।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top