রক্ষণশীলতার খোলস থেকে বেরিয়ে আসতে এবার রেস্টুরেন্টে নারীদের জন্য পৃথক ব্যবস্থার আইন তুলে নিচ্ছে সৌদি সরকার।
সৌদি আরবে ইতিমধ্যে নারীদের গাড়ি চালানো, মাঠে বসে খেলা দেখা ও হলে গিয়ে সিনেমা দেখা এমনকি অভিভাবক ছাড়াই হোটেলে কক্ষ ভাড়া নেয়ার অনুমতি দিয়েছে দেশটির সরকার।
এবার আরও একটি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিল। আগে কোনো রেস্তোরাঁয় যেতে হলে নারী এবং পুরুষদের আলাদা দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে হতো। কিন্তু এখন সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হচ্ছে।
এখন নারী এবং পুরুষের জন্য আলাদা দরজা থাকবে না। নারী-পুরুষ একই দরজা দিয়ে রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করতে পারবে। ফলে একসঙ্গে বসে খাওয়ার অধিকারও পাচ্ছে তারা। খবর রয়টার্সের।
সম্প্রতি সৌদি আরবের পৌরসভা এবং গ্রামীণ সম্পর্কবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক টুইট বার্তায় এ ঘোষণা দিয়েছে।
এতে বলা হয়, এখন থেকে নারী-পুরুষের পৃথক দরজা দিয়ে রেস্টুরেন্টে প্রবেশের নিয়ম আর বাধ্যতামূলক নয়। সৌদি আরবে কঠোর সামাজিক অনুশাসনের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই বেশ কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। কিন্তু সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান কট্টরপন্থী সৌদিতে সংস্কারের মাধ্যমে নানা ধরনের পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন।
সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে, কনফারেন্স এবং কনসার্টগুলোতে এখন আর নারী-পুরুষকে আলাদা দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে হবে না। তবে নারী-পুরুষ পাশাপাশি সিটে বসতে পারবেন কি-না সে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। যদিও রেস্টুরেন্ট মালিকদের ওপর নতুন এই নিয়ম চাপিয়ে দেয়া হয়নি।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, এই নিয়ম মানা বাধ্যতামূলক নয়। মালিকরা নতুন নিয়ম অনুসরণ করতে না চান তবে রেস্টুরেন্টগুলো চাইলে আগের মতোই আলাদা দরজার ব্যবস্থা রাখতে পারে।
২০১৭ সালে মোহাম্মদ বিন সালমানকে সৌদি আরবের যুবরাজ করা হয়। এরপর থেকে তিনি দেশটির কট্টর রক্ষণশীল সমাজকে সহজ করার উদ্যোগ নেন। তারপর থেকে সৌদি আরবে ধারাবাহিকভাবে সমাজ সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
ধর্মীয়ভাবে রক্ষণশীল দেশ হিসেবে পরিচিত সৌদি আরবে এতদিন সিনেমা, নারীদের গাড়ি চালানোসহ বিভিন্ন বিষয় ধর্মীয় কারণে নিষিদ্ধ ছিল। ভিশন-২০৩০ অনুযায়ী, দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ‘কট্টরপন্থা’ উপড়ে ফেলে ‘মধ্যপন্থার’ ইসলাম ধর্মে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন।
চলতি বছরের প্রথমদিকে রাজকীয় এক ফরমানে কোনো পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই সৌদি নারীদের বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হয়। এর আগে ২০১৮ সালে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। দীর্ঘ ৩৫ বছরের পর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে চালু করা হয়েছে সিনেমা হলও।