বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, জোর করে রাজস্ব আদায় না বাড়িয়ে দেশ এগিয়ে নিতে সবার সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। রাজস্বের প্রয়োজন আছে। তবে সেটা লাঠিয়াল বাহিনী পাঠিয়ে নয়।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ফস্টরিং গ্লোবাল ফ্রি ট্রেড রিলেশানস’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ সব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রাজস্ব বাড়ানোর জন্য এনবিআর কাজ করে। ভালো কথা, এটা দরকার। তবে এ প্রক্রিয়াতে, ট্যারিফ কমিশন, শিল্প মন্ত্রণালয়সহ অন্যদের আরও বেশি মতামত নেয়া প্রয়োজন। শুধু টাকা আদায় করাটাকে চিন্তায় নিলে হবে না। আরও গভীরে ঢুকে দেখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের রাজস্ব আয় বাড়াতে পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়। এ ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। যাতে এর ফলে বাণিজ্যের ওপর কোনো প্রভাব না পরে। দেশের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য অন্যান্য খাতও খুঁজে বের করতে হবে। একটি ব্যালেন্স নীতি গ্রহণ করা সম্ভব হলে পণ্যের মূল্যের ওপর চাপ কমবে।
কমনওয়েলথ অব ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টেটস-বাংলাদেশ চেম্বার আব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিআইএস-বিসিসিআই) এ সেমিনারের আয়োজন করে।
সিআইএস-বিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মো. হাবিবুল্লাহ ডনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এ সংগঠনের উপদেষ্টা মঞ্জুর আহমেদ।
বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব নজিবুর রহমান, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ, বাণিজ্য সচিব মো. জাফর উদ্দীন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে গেলে বিশ্ববাণিজ্য প্রসারের জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) করার বিকল্প নেই। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। এর তিন বছর পর এলডিসিভুক্ত দেশের বাণিজ্য সুবিধাগুলো আর থাকবে না। এ জন্য প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বাণিজ্য সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। রফতানি বাড়াতে নতুন বাজার খুঁজতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাশিয়াসহ সিআইএসভুক্ত দেশগুলো এবং ব্রাজিলসহ মারকসভুক্ত দেশগুলোতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রচুর চাহিদা আছে। এ সব বাজারে পোশাক রফতানি সম্ভব হলে আয় কয়েকগুণ বাড়বে। মূলত উচ্চ শুল্কহারের কারণে বাংলাদেশ এ সব দেশে পণ্য রফতানি করতে পাচ্ছে না।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ভ‚টানসহ বেশকিছু দেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর করার চেষ্টা চলছে। ব্রাজিল বাংলাদেশের তৈরি পোশাক নিতে চায়, তবে তাদের গরুর মাংস বাংলাদেশে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ নেই।