বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার শামীম বিল্লাহ ও মোয়াজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ শুনানি শেষে রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) ওয়াহিদুজ্জামান আসামিদের আদালতে হাজির করে দশদিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলেন, গত ৬ অক্টোবর রাত ৮টা ৫ মিনিটের দিকে আবরারকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে রাত আড়াইটা পর্যন্ত হলের ২০১১ এবং ২০০৫ নম্বর কক্ষে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ক্রিকেট স্ট্যাম্প এবং লাঠি-সোটা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রচণ্ড মারধর করার ফলে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। আবরারের মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা ওই ভবনের দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতে তার মৃতদেহ ফেলে রাখে। পরে কিছু ছেলে আবরারের মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সুষ্ঠু তদন্ত, রহস্য উদঘাটন, অন্যান্য সহযোগী ও এজাহার বহির্ভূত পলাতক আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার, কোনো হুকুমদাতা থাকলে তাদের শনাক্ত করা ছাড়াও কি কারণে এরকম নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে তা জানার জন্য প্রার্থিত মেয়াদে আসামিদের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া প্রয়োজন।
আসামিদের রিমান্ড বাতিল করে জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালতে প্রসিকিউশন ও আসামিদের পক্ষে আইনজীবীদের দীর্ঘসময় শুনানি হয়। রিমান্ড মঞ্জুর করার আগে বিচারক আসামিদের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কোনো কথা বলেনি।
আসামিদের গ্রেফতার করা সংক্রান্তে বলা হয়েছে, সাতক্ষীরা হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় গত শুক্রবার বিকেলে শামীম বিল্লাহকে ও উত্তরা ১৪ নম্বরের একটি বাসা থেকে শনিবার সকাল ১১টায় মোয়াজকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ (সিআইডি)।
প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর রাতে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরার ফাহাদকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী মারধর করে। বুয়েটের শেরে বাংলা হলের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় আবরার ফাহাদকে উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে রাজধানীর চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন।