নতুন প্রজন্মের কন্ঠে বাংলা গানের কিংবদন্তি শিল্পীদের জনপ্রিয় সব গানের আয়োজন নিয়ে দেশ টিভিতে শুরু হয়েছে ”ইগলু ক্ষীর মালাই ট্রিবিউট টু দ্যা লিজেন্ড” নামের মিউজিক্যাল লাইভ অনুষ্ঠান। আগামী পর্ব থাকছে বাংলাদেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী নিলুফার ইয়াসমিনকে নিয়ে।
১৯৪৮ সনে কলকাতায় জন্ম নেয়া নিলুফার ইয়াসমিন পাঁচ বোনদের মধ্যে চতুর্থ। বড় বোন ফরিদা ইয়াসমিন ও মেজো বোন ফওজিয়া খান প্রতিষ্ঠিত সঙ্গীতশিল্পী। সেজো বোন ডক্টর নাজমা ইয়াসমীন হক, ছোট বোন সাবিনা ইয়াসমিন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী। নিলুফার ইয়াসমিন প্রখ্যাত গীতিকার, সুরকার, শিল্পী ও অভিনেতা খান আতাউর রহমানের সঙ্গে ১৯৬৯ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
পরের বছর তার একমাত্র পুত্র কন্ঠশিল্পী খান আসিফুর রহমান আগুনের জন্ম হয়। নীলুফার ইয়াসমিন বাংলাদেশ বেতারের ছোটদের অনুষ্ঠান খেলাঘরের মাধ্যমে শিল্পী জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের শুরু থেকে আমৃত্যু একজন নিয়মিত শিল্পী হিসেবে গান গেয়েছেন। তিনি উচ্চাঙ্গ, নজরুল, অতুলপ্রসাদ, দ্বিজেন্দ্রলাল, রজনীকান্ত, টপ্পা, ঠুমরি, কীর্তন, রাগপ্রধান, আধুনিক গানসহ গানের ভুবনের প্রায় সবগুলো শাখাতেই অবাধ বিচরণ করেছেন। রাগ প্রধান গানে অসাধারণ দখল থাকলেও তিনি নজরুলগীতি শিল্পী হিসেবেই বেশি পরিচিত।
নীলুফার ইয়াসমিন বেশ কয়েকটি ছায়াছবিতে কণ্ঠ দিয়েছেন। যেমন- শুভদা, অরুণ-বরুন-কিরণমালা, জোয়ার ভাটা, আবার তোরা মানুষ হ, সুজন সখী , যে আগুনে পুড়ি, জীবন-তৃষ্ণা, জলছবি ইত্যাদি। ১৯৯৫ সাল থেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগের নজরুল সঙ্গীত বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে মৃত্যুর শেষ দিন পর্যন্ত নিয়োজিত ছিলেন। সুজন চলচ্চিত্রে কণ্ঠপ্রদানের জন্য ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সংস্থার পুরস্কার, শুভদা চলচ্চিত্রে কন্ঠপ্রদানের জন্য ১৯৮৬ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সংস্থার পুরস্কার, সঙ্গীত বিষয়ে অনন্য অবদানের জন্য ২০০৪ সালে মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় একুশে পদক লাভ করেন।
নিলুফার ইয়াসমিনের জনপ্রিয় সব গান পরিবেশন করতে থাকছেন এই প্রজন্মের শিল্পী রুমানা হক। ফারজানা বিথীর উপস্থাপনা ও আলমগীর হোসেনের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি আগামী শুক্রবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।