নিত্য নতুন কৌশল বের করে বিকাশে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতারক চক্র। কেউ প্রতারণার শিকার হলে যে ফোন নম্বরে সহায়তা নিতে বলেছে বিকাশে কর্তৃপক্ষ, সেই একই নম্বর ক্লোন করে মেধাবী লোকদেরও বোকা বানিয়ে ফেলছে প্রতারক চক্র। এবার একটি ব্যতিক্রমি প্রতারণার ঘটনার খবর পাওয়া গেল।
আজ বুধবার সকালে ওমর শরীফের (ছদ্মনাম) ফোন নম্বরে একটি বিকাশ এজেন্ট নামধারী একজন ফোন দিয়ে বলেন, আপনার অ্যাকাউন্টে দুই হাজার টাকা গিয়েছে। তবে একটা ঝামেলায় এটা ফ্রিজ হয়ে গেছে। এখনই ওঠাতে পারবেন না। বাস্তবেই গতকাল তাঁর অ্যাকাউন্টে দুই হাজার টাকা পাঠিয়েছিল এক বন্ধু, যা তখনো তোলা হয়নি।
বিকাশ এজেন্ট পরিচয় দেওয়া সে ব্যক্তি বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যে আপনাকে বিকাশ থেকে ফোন দিতে পারে। বিকাশ থেকে ফোন দেয়া হলে যেসকল প্রশ্ন করবে তার সঠিক উত্তর দেবেন, তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট সচল হয়ে যাবে। টাকাটাও তুলতে পারবেন।
এরপর বিকাশ কর্তৃপক্ষের সহায়তার জন্য ব্যবহৃত 16247 নম্বরের অনুকরণে ওমর শরীফের ফোন নম্বরে +16247 (পার্থক্য শুধু + চিহ্ন) নম্বরে ফোন আসে। বিকাশ কর্তৃপক্ষের পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি সমস্যার কথা বলে এবং সমাধানের জন্য পিন নম্বর না, পিন নম্বরের যোগফল জানতে চায়। ওমর শরীফ ভাবলেন যেহেতু পিন নম্বর চায়নি, চেয়েছে যোগফল, তিনি সেটা দিয়ে দেন। এর কিছুক্ষণ পরেই ওমর শরীফের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হয়ে যায়।
প্রতারক চক্র এখানে বিকাশের অনুরূপ ফোন নম্বর ব্যবহার করেছে। অনলাইনে এরকম অনেক ভয়েস কলের অ্যাপস রয়েছে যেগুলোয় ক্রেডিট কিনে নিয়ে নম্বর বানানো যায়। এই নম্বর বানিয়ে প্রতারক চক্র প্রতারণা করেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে প্রতারক চক্র নম্বর পায় কোথায়?
এ বিষয়ে জানতে ফোন করা হয়েছিল ওমর শরীফকে জামালপুরের যে এজেন্ট থেকে (01865062738 এজেন্ট নম্বর এটা) টাকা পাঠানো হয়েছিল তার কাছে। এজেন্টকে প্রশ্ন করা হয়, আপনার এখান থেকে কাউকে টাকা পাঠানো হয়েছে, যে নম্বরে টাকা পাঠানো হয়েছে সেই নম্বর প্রতারক চক্রের হাতে গেল কেন? এই বিষয়ে ওই এজেন্ট কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। সাংবাদিক পরিচয়ে নিজের নামও বলতে চাননি। এজেন্ট বলেন, ‘প্রতারক চক্র নম্বর পায় কোথায় আমি কীভাবে বলবো?’
তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনার দোকানের আশেপাশে কেউ নম্বর টুকে নেওয়ার জন্য ঘোরাফেরা করে কি না, তার উত্তর ‘আমি ওইসব দেখি নাকি, আমার দেখার সময় কই?’
তবে ভুক্তভোগীরা বলছেন, প্রতারক চক্ররা নম্বর কীভাবে সংগ্রহ করে এটা একটা বড় প্রশ্ন। এক্ষেত্রে এজেন্টরা সম্পৃক্ত কি না বিষয়টি তলিয়ে দেখা দরকার বিকাশ কর্তৃপক্ষের। কেননা প্রতারক চক্ররা বিকাশ নম্বর সংগ্রহ করার পাশপাশি তাদের সঠিক টাকার পরিমাণও জানা থাকে।