রাজধানীর বনানীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আগুন নেভানোর সময় আহত ফায়ার সার্ভিসের ফায়ারম্যান সোহেল রানার মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে আজ সোমবার রাত ১০টা ৪০ মিনিটে সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় আনা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে কিছু ফরেনসিক ফরমালিটিজ রয়েছে, সেগুলো সম্পন্ন হয়েছে। ইসলামিয়া বাস্কেট কোম্পানির কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে আজ রাত ৮টায় ফায়ার ফাইটার সোহেল রানার মরদেহ ঢাকায় আনা হচ্ছে। রাত ১০টা ৪০ মিনিটে সোহেলের মরদেহ ঢাকায় পৌঁছবে।
এর আগে বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার পর উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছিলেন রানা। ২৩ তলা ওই ভবনে আটকা পড়া মানুষদের ল্যাডারের মাধ্যমে নামাচ্ছিলেন তিনি।
সোহেল যখন চার-পাঁচজন আটকে পড়া ব্যক্তিকে উদ্ধার করে নিচে নামাতে চান তখন উদ্ধারকারী ল্যাডারটি ওভারলোড দেখাচ্ছিল। ওভারলোড হলে সাধারণত সিঁড়ি নিচে নামে না, স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক হয়ে যায়। তাই ল্যাডারের ওজন কমাতে একপর্যায়ে সোহেল ল্যাডার থেকে বেয়ে নিচে নামছিলেন। এরপর ল্যাডারটির ওজন কমে যাওয়ায় সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যায়। এরপরই ঘটে সেই ঘটনাটি, যা তার জীবনের আলো নিভিয়ে দিল। ল্যাডারের ভেতরে সোহেলের একটি পা ঢুকে যায়। এ ছাড়া তার শরীরের সেফটি বেল্টটি ল্যাডারে আটকে পেটে প্রচণ্ড চাপ লাগে। এরপর থেকেই সংজ্ঞাহীন সোহেল।
দুর্ঘটনার পরপরই সোহেল রানাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রতিদিন চার ব্যাগ রক্ত দেওয়া হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নতি হচ্ছিল না। পেটের ক্ষতের কারণে সমস্যা হচ্ছিল রানার।
সে কারণে সিএমএইচের চিকিৎসকদের পরামর্শে গত শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রানাকে পাঠানো হয় সিঙ্গাপুর। তার দেখাশোনা করার জন্য ফতুল্লা ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রায়হানুল আশরাফকেও তার সঙ্গে পাঠানো হয়।