বিশ্বের সর্ববৃহৎ সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ফেসবুকে সাইবার অপরাধীদের ব্যাপক আনাগোনার কথা উঠে এসেছে নতুন কে রিপোর্টে। আর এ নিয়ে বেশ পেরেশানিও পোহাতে হচ্ছে ফেসবুককে।
সিসকোর টালোস ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা ফেসবুকে সক্রিয় ৭৪টি গ্রুপকে শনাক্ত করেছেন। ফেসবুকের এই গ্রুপগুলোর সঙ্গে ৩ লাখ ৮৫ হাজার অপরাধী জড়িত। তারা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য কেনা-বেচা ছাড়াও ড্রাইভিং লাইসেন্স বা ছবির মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি করছেন। পাশাপাশি ইমেইল হ্যাকিংয়ের জন্যে ফিশিং টুল বিক্রি এবং নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত তারা।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই গ্রুপগুলোকে বের করতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি। এই গ্রুপগুলোকে তারা ‘অনলাইন অপরাধীদের ভাসমান বাজার’ বলছেন।
এসব গ্রুপ তাদের নামকরণের ক্ষেত্রেও খোলামেলা। নামেই বোঝা যায় তারা এই কাণ্ডগুলো ঘটান। যেমন- ‘স্পাম প্রফেশনালস’, ‘স্পামার অ্যান্ড হ্যাকার প্রফেশনাল’ এবং ‘ফেসবুক হ্যাক (ফিশিং)’ নামে বিরাজ করছে গ্রুপগুলো। কোনো ফেসবুক ব্যবহারকারী ‘স্পাম’, ‘কার্ডিং’ বা ‘সিভিভি’ এর মতো শব্দ ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট গ্রুপের একাধিক পরিচয় বের করে আনতে পারছেন।
গ্রুপগুলো পোস্টে অর্থের বিনিময়ে চুরি করা তথ্য প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। এদের খুঁজতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা এমনও দেখেছেন, একটি গ্রুপ হটমেইল এবং ইয়াহু ইমেই ব্যবহারকারীদের এমন একটি স্পাম টুল দেয়ার কথা বলছে যা ভুয়া অ্যাপল ইনভয়েস পাঠাতে পারে। একবার এসব ইনভয়েসে ক্লিক করলে ম্যালপূর্ণ ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে।
টালোসের বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে দেখেন, ইনভয়েসগুলো ফিশিং স্ক্যামের সঙ্গে মিলে যায় যেগুলো আগেই শনাক্ত করা হয়েছিল। সাইবার অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হয় এমন খোলামেলা নাম নিয়ে কিছু গ্রুপ প্রায় ৮ বছর ধরে ফেসবুকে বিচরণ করছে।
এদের ফেসবুকে খুঁজতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট আরো অনেক গ্রুপ বের করে দেখায় ফেসবুক। তবে টালোস যে ৭৪টি গ্রুপকে খুঁজে বের করেছে তাদের বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক।
কিন্তু নতুন নতুন গ্রুপ আবারো আসছে, জানান বিশেষজ্ঞরা। তবে এদের ঠেকাতে তারা ফেসবুকের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ফেসবুকের এক মুখপাত্র জানান, স্পাম এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে ফেসবুকের নীতিমালা ভঙ্গ করছে গ্রুপগুলো। এদের অধিকাংশই তৈরি হয়েছে ২০১৮ সালে। তবে আমরা এদের ঠেকাতে বড় যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছি।
অপরাধীদের ঠেকাতে গ্রুপগুলোর পেছনের গ্রুপগুলোকেও বন্ধ করা হচ্ছে। তারা যেন আরো গ্রুপ তৈরি করতে না পারে সেদিকেও দৃষ্টি রাখা হয়েছে। ২০১৮ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফেসবুক থেকে ১.২ বিলিয়ন স্পাম সরানো হয়েছে। সেইসঙ্গে ফেসবুক তার নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং নিরাপত্তাকর্মী দ্বিগুন বৃদ্ধি করেছে।
সূত্র: ডেইলি মেইল