দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরীর জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরে বদলির ঘটনায় হতাশা ও উদ্বেগ জানিয়েছে দুদকে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র্যাক)। সংগঠনটি তাঁকে পুনরায় দুদকে ফিরিয়ে আনার দাবি তুলে বলেছে, একজন সৎ কর্মকর্তার এমন বদলির কারণে দুদকের অন্য সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তাদের মনোবল ভেঙ্গে যাবে। আজ বুধবার র্যাকের সভাপতি হায়দার আলী ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আশা জাগিয়েছিল। দুর্নীতি দমন কমিশনের বেশকিছু অভিযানও দুর্নীতি বিরোধী মানুষের কাছে ছিল ব্যাপক প্রশংসিত। এক্ষেত্রে দুদকের মহাপরিচালক এবং এনফোর্সমেন্ট টিমের প্রধান মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরীর অভিযানগুলো সাধারণ মানুষের নজর কাড়ে। ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিকে আটক, সরকারের ভূমি উদ্ধার, প্রভাবশালীদের কাছ থেকে সরকারি গাড়ি উদ্ধারসহ বেশকিছু কাজ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তিনি।
সংগঠনটি আরও জানায়, দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে নিভৃতেই দুর্নীতি বিরোধী কাজ করে যাচ্ছেন মুনীর চৌধুরী। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক হিসেবে যোগদানের পর তার নেতৃত্বাধীন কর্মকাণ্ড ব্যাপক প্রশংসিত ছিল। তার কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি সারা দেশের মানুষের আস্থা ও ভরসাস্থলে পরিণত হন। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুনীর চৌধুরীর একের পর এক অভিযানে ভেঙ্গে যায় বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতির সিন্ডিকেট। এছাড়া দুদকের হটলাইন ১০৬ নম্বরে অভিযোগ পাওয়ার পরই তিনি বিভিন্ন দপ্তরে হানা দিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মুনির চৌধুরীর এনফোর্সমেন্ট টিম যখন সারা দেশে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে ব্যস্ত, ঠিক তখনই তাকে বদলি করা হলো জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরে। জনশ্রুতি আছে, বড় দুর্নীতিবাজ বা রাঘববোয়ালরাই তাকে বদলির জন্য বেশ কিছুদিন ধরে সক্রিয় ছিল। তার বদলির ঘটনায় বিভিন্ন সরকারি অফিসে দুর্নীতিবাজরা গোপনে মিষ্টি বিতরণ উৎসব করেছেন বলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে।
এসব ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে র্যাক বিবৃতিতে বলেছে, আমরা মনে করি, একজন সৎ কর্মকর্তার এমন বদলির কারণে দুদকের অন্য সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তাদের মনোবল ভেঙ্গে যাবে। এতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতিকে পিছিয়ে দেবে। আমাদের প্রত্যাশা মুনীর চৌধুরীকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করা ও দেশের স্বার্থেই দুদকে ফিরিয়ে আনা হোক।