কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিগত দুই মেয়াদের সরকার কৃষিক্ষেত্রে নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এখন আমাদের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা।
আজ বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
কৃষি মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক খাদ্য নীতি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইএফপিআরআই) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘এগ্রিকালচারাল টান্সফরমেশন ইন বাংলাদেশ : এভিডেন্স অন এগ্রিকালচারাল বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড টিউট্রেশন সেনসিটিভ এগ্রিকালচার’ শীর্ষক পলিসি ওয়ার্কশপ-এর উদ্বোধন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও এগ্রিকালচারাল পলিসি সাপোর্ট ইউনিটের (এপিএসইউ) মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) ভারপ্রাপ্ত মিশন ডিরেক্টর জেইনাহ সালাহি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মীর নুরুল আলম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আজাদ বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। আইএফপিআরআই-এর বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেনটিটিভ ড. আখতার আহমেদ স্বাগত বক্তব্য দেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা দেওয়ার প্রধানতম এবং অন্যতম উৎস হচ্ছে কৃষি। সরকার কৃষি উন্নয়নে যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন হালনাগাদ করেছে। ফলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পয়েছে। আমাদের কৃষির টেকসই উন্নয়নের জন্য কৃষি রূপান্তর, কৃষি বহুমুখীকরণ, বাজারজাতকরণ এবং ভ্যালু অ্যাড ও ভ্যালু চেইন অপরিহার্য।
তিনি বলেন, জৈবপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বৈচিত্রপূর্ণ খাদ্যের উৎপাদন জরুরি। হালনাগাদ কৃষি নীতিতে বায়োটেকনোলজি গবেষণা ও উন্নয়নয়নকে অগ্রধিকার দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আমাদের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আর এজন্য কৃষি গবেষণার কোনো বিকল্প নেই।
কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, আধুনিক জৈব প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে সরকার জিএমওসহ কৃষি রূপান্তর, বিভিন্ন হাইব্রিড জাত নিয়ে এসেছে। আমাদের চাহিদার চেয়ে ৩০ লাখ টন আলু বেশী উৎপন্ন হয়, যার মাত্র ১ লাখ টন রপ্তানি করা যাচ্ছে। মাথাপছিু আয় বৃদ্ধিতে কৃষির বিপ্লবের কোনো বিকল্প নেই।
তিনি আরো বলেন, উদ্ভাবিত বিটি বেগুন কৃষক, ভোক্তা সবাই গ্রহণ করেছে। এর উৎপাদন ভালো এবং বেশ লাভজনক। কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত নতুন নতুন জাত নিয়ে সমালোচনা করছেন। তারা বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণ ছাড়া কথা বলছেন। এসব ফসলে কোন ক্ষতিকর কিছু নেই। আমাদের কৃষকরা এসব উন্নত জাতের স্বত্ব হারাবে বলে যে কথা বলা হচ্ছে তাও সঠিক নয়।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, খাদ্যে ভেজাল রোধে আমাদের আরো কঠোর হতে হবে। খাদ্য ভেজাল রোধে আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। ভেজাল প্রতিরোধে ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ল্যাব ও বিভাগীয় শহরের একটি করে ল্যাব স্থাপন করা হবে যাতে করে দ্রুততার সাথে ভেজার সনাক্ত করা যায়।