Friday , 1 November 2024
সংবাদ শিরোনাম

ব্রিজ আছে রাস্তা নাই

একটি রাস্তার আশায় ১৫ বছর ধরে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন হাকালুকি হাওর পাড়ের কয়েক সহস্রাধিক মানুষ। কুলাউড়া উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের চিলারকান্দি, বড়দল, কানেহাত, কাড়েরা ও কাদিপুর ইউনিয়নের ছকাপন গ্রামের কৃষকরা হাওরে যাওয়ার জন্য বগলকুড়ি খালের ওপর নির্মিত এই রাস্তাটি ব্যবহার করে ব্রিজটির উপর দিয়ে হাওরের মধ্যবর্তী ফানাই নদী পর্যন্ত কৃষি জমি চাষাবাদ ও স্থানীয় জেলেরা মাছ ধরার জন্য নিয়মিত যাওয়া আসা করতো। বর্তমানে কৃষকদের চলাচলের জন্য ওই এলাকায় পাকা ব্রিজ থাকলেও নেই কোন সংযুক্ত রাস্তা। এই কারণে এলাকার কয়েক সহস্রাধিক কৃষিজীবী মানুষ ও জেলেদের নানা দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে কৃষিকাজ ও মাছ চাষের জন্য হাওরে যেতে হয়। মাটির রাস্তাটি নতুন করে তৈরি হলে ৪/৫টি গ্রামের কয়েক সহস্রাধিক কৃষক ও জেলেদের মুখে হাসি ফুটবে এমনটা মনে করছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিন স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করলে তারা জানান, ১৯৯৭ সালের দিকে সরকারিভাবে এলজিইডি’র মাধ্যমে প্রায় ১০-১২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ব্রিজ ও প্রায় এক কিলোমিটার মাটির রাস্তা তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে এলাকার মানুষ ৫-৬ বছর এই ব্রিজ ও রাস্তা ব্যবহার করে তাদের কৃষিকাজ রীতিমত করে আসছিলেন। কিন্তু বিগত দিনে কিছু দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্পমেয়াদী বন্যার ফলে এই মাটির রাস্তাটি সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে এই রাস্তাটি মাটি ভরাট বা পাকাকরণ করার জন্য আর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। বর্তমানে প্রায় ১৫ বছর থেকে এই ব্রিজটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে যেখানে নেই কোনো রাস্তার অস্তিত্ব।

স্থানীয় ভূকশিমইল ইউনিয়নের চিলারকান্দি গ্রামের কৃষক মাহবুব হাসান জসিম, রফিক মিয়া, রেণু মিয়া, মালিক মিয়া, খায়ের আহমদ, বড়দল গ্রামের আব্দুর রহিম, ফারুক মিয়া, কাড়েরা গ্রামের সামাদ কবীর হুমায়ুন রশীদ, কাদিপুর ইউনিয়নের ছকাপন গ্রামের আব্দুল আহাদ, আব্দুস সালাম, পাখি মিয়া দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে বলেন, এই রাস্তাটি আমাদের কৃষকদের জন্য হাওর যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হওয়ার ফলে সারাবছরই অনেক দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে নানা কষ্টের শিকার হতে হয়। আমাদের সকল কৃষকদের কষ্টের কথা চিন্তা করে অচিরেই বগলকুড়ি খালের উপরে নতুন করে মাটির রাস্তাটি তৈরি করা হলে আমরা অতি সহজেই হাওরের মধ্যবর্তী স্থানে কৃষিকাজের জন্য সহজেই যেতে পারবো। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

ভূকশিমইল ইউনিয়নের কাড়েরা গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষার্থী সৈয়দ মাহফুজ হামিদ বলেন, এলাকার সাধারণ কৃষক ও জেলেদের হাওরে চলাচল করার সুবিধার্থে চিলারকান্দি থেকে বরমচাল পর্যন্ত রাস্তা পুনঃনির্মাণ করলে স্থানীয় এলাকাবাসী অনেক উপকৃত হতো।

স্থানীয় ভূকশিমইল ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির কালের কণ্ঠকে বলেন, কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই অপরিকল্পিতভাবে এই ব্রিজটি তৈরি করা হয়েছিলো স্থানীয় এক ব্যক্তির উদ্যোগে। নতুন করে রাস্তা মেরামত করার পর্যাপ্ত অর্থ নেই। যদি কোনো সুযোগ থাকে তাহলে পরিকল্পনা করে এলাকার মানুষের সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে রাস্তা তৈরি করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

কুলাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী মু. ইসতিয়াক হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, রাস্তার মাটির কাজ আমাদের ডিপার্টমেন্টের না। এগুলো উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে টিআর-কাবিখার মাধ্যমে করা হয়।

কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, উপজেলা পরিষদ থেকে প্রাপ্ত বরাদ্দগুলো প্রতিবছর ইউনিয়নগুলোতে দেয়া হয়। গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন কর্মসূচীর মধ্য (কর্ম সৃজন, কাবিখা, কাবিটা) থেকে জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো ইউনিয়নের পরিষদের পক্ষ থেকে মেরামত করার সুযোগ রয়েছে

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top