কক্সবাজারের পেকুয়ায় এক রাতেই কক্সবাজার ১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের প্রার্থী চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমের নৌকা প্রতীকের ৫টি নির্বাচনী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরিকল্পিত এই অগ্নিসংযোগে ৫টি নির্বাচনী কার্যালয়ের আসবাবপত্রসহ পুরো কার্যালয় পুড়ে ছাই হয়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অকুস্থলে গিয়ে আগুন নেভাতে পারায় আশপাশের বহু স্থাপনা ভয়াবহ আগুন থেকে রক্ষা পায়। একসঙ্গে আওয়ামীলীগের ৫টি নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয় শুক্রবার দিবাগত রাতে।
অপরদিকে একই রাতে পেকুয়া সদর ইউনিয়নস্থ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় বিএনপির ক্যাডাররা। এ সময় স্থানীয় লোকজন ঘটনা আঁচ করতে পেরে এগিয়ে গেলে প্রাণে রক্ষা পান আবুল কাশেম। এসব ঘটনার পর পুরো পেকুয়াজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে। অবশ্য পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে না পারে সে জন্য পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরা টহল দিচ্ছে।
পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম কালের কণ্ঠকে জানান, একসময়ের বিএনরি ঘাঁটি পেকুয়ায় আওয়ামী লীগ তথা নৌকার গণজোয়ার চলছে। কিন্তু এই বিষয়টিকে বিএনপি মেনে নিতে পারছে না। তাই শুক্রবার দিবাগত রাতে একসঙ্গে চারটি ইউনিয়নের পাঁচটি নির্বাচনী কার্যালয়ে নাশকতা চালায় বিএনপি সন্ত্রাসীরা।
আবুল কাশেম বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি বিএনপির সশস্ত্র ক্যাডাররা কম্বল পরিহিত হয়ে ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা চালায় পেকুয়া সদরস্থ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের ভেতর ঢুকে। তবে এ সময় স্থানীয় লোকজন ও দলীয় নেতাকর্মীরা এগিয়ে এলে আমি প্রাণে রক্ষা পাই। এ সময় ধারালো একটি দাসহ (ধামা-দা) হাতেনাতে আটক করা হয় বিএনপির ক্যাডার ভোলাইয়্যাঘোনার নজির আহমদের ছেলে মো. হোছনকে (৩৫)।
আওয়ামী লীগদলীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাতের বিভিন্ন সময়ে একে একে পাঁচটি নির্বাচনী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সেগুলো হলো পেকুয়া সদর ইউনিয়নের পেকুয়া বাজার, টৈটং ইউনিয়নের হাজিবাজার, মগনামা ইউনিয়নের বাইন্যাঘোনা, উজানটিয়া ইউনিয়নের মধ্যম উজানটিয়া ও উত্তর করিমদাদ ঘাটের আওয়ামী লীগ তথা নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী কার্যালয়।
একই তথ্য জানিয়ে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন ভূঁইয়া কালের কণ্ঠকে জানান, পেকুয়ার চারটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের পাঁচটি নির্বাচনী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের পৃথক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছেন। এ ছাড়া পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় বিএনপির ক্যাডার মোহাম্মদ হোছনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি ধারালো অস্ত্র।
ওসি জাকির হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও বিজিবি সদস্য টহল দিচ্ছে। এসব ঘটনায় পৃথক মামলা নেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি যাতে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকে সে জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।