আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ সদর আসনে মহাজোটের প্রার্থী জাপা চেয়ারম্যান এরশাদের প্রতিদ্বন্দ্বী এখনো ৯ জন। এসব প্রার্থীর মধ্যে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির নেতা সাব্বির আহমেদ তথ্য গোপনের অভিযোগে এরশাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছেন। ওই অভিযোগের শুনানি আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন অভিযোগকারী প্রার্থী।
আসনটি ১৯৯১ সাল থেকে জাপা চেয়ারম্যান এরশাদের দখলে। এবার আসনটি পেতে আওয়ামী লীগের ৯ জন প্রার্থী দলীয় মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন। তাঁদের অনেকেই জানতেন যে আসনটি মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হবে। এরপরও আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে সদর আসনটি দাবি করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থীকে এই আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কিছুটা ক্ষুব্ধ হলেও তাঁদের অনেকে এখন মহাজোটের পক্ষে ভোট চাইছেন।
রংপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টির শক্ত অবস্থান থাকলেও এখানে বিএনপির মহানগর সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন, রিটা রহমান, জাসদের সাখাওয়াত রাঙ্গা, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির সাব্বির আহম্মেদ, ইসলামী আন্দোলনের আমিরুজ্জামান পিয়াল, বাসদের আনোয়ার হোসেন বাবলু, জাকের পার্টির আলমগীর হোসেন আলম, খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ছামসুল হক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এরশাদকে আসনটি ছেড়ে দিতে নারাজ। এসব প্রার্থীর অনেকে নির্বাচনী প্রচারণাও শুরু করেছেন।
প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির সাব্বির আহম্মেদ বলেন, ‘জাপা চেয়ারম্যান এরশাদ হলফনামায় তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট জমা দেননি। হারিয়েছে বলে একটি জিডি জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে দুদকের একটি মামলার তথ্যও তিনি হলফনামায় দেননি। এ বিষয়ে আমি জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার বিষয়টি আমলে না নেওয়ায় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছি। আমার অভিযোগের শুনানি আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত না দিলে আমি উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হব।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি বিগত নির্বাচনে এরশাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দ্বিতীয় হয়েছিলাম।’
বাসদের আনোয়ার হোসেন বাবলু বলেন, ‘জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ নির্বাচিত হওয়ার পর বেশির ভাগ সময় ঢাকায় থাকেন। এলাকার লোকজন তাঁকে কাছে পায় না। মানুষ পরিবর্তন চায়। মানুষের কাছাকাছি যে প্রার্থী থাকবে, ভোটাররা তাঁকে ভোট দেবে। এই চিন্তা থেকে আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আশা করি, জনগণ আমাকেই ভোট দেবে।’
এই আসনে মোট ১২ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল হক ফুলু সরকার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হকের মনোনয়ন বাতিল করা হয়।