Friday , 1 November 2024
সংবাদ শিরোনাম

অনুমোদনবিহীন বোর্ড কারখানায় পরিবেশ দূষণ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পেপার বোর্ড মিলের অপরিশোধিত বর্জ্যে পরিবেশ দূষণের অভিযোগে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। মাত্রাতিরিক্ত দূষণের কারণে বায়ু ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সবাই; বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশু।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, সোনারগাঁও পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গোবিন্দপুর গ্রামে ২০১২ সালে বিসমিল্লাহ বোর্ড কারখানা উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। পরিবেশ ছাড়পত্র ও ইটিপি ছাড়া কারখানাটির অপরিশোধিত তরল বর্জ্যে স্থানীয় পঙ্খীরাজ খালের পানি ও বর্জ্যের দুর্গন্ধে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ হচ্ছে।

কারখানাটি রাস্তার পাশে থাকায় সোনারগাঁ জি আর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সূবর্ণগ্রাম পাঠাগারের শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা নাক চেপে আসা যাওয়া করে।

কারখানার পাশের বাসিন্দা ইব্রাহিম তালুকদার জানান, কারখানা বর্জ্যের দুর্গন্ধে রাতে ঘুমাতে পারি না। তা ছাড়া এলাকার অধিকাংশ মানুষ শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত। স্থানীয় বাগমুছা গ্রামের ইসমাইল হোসেন বলেন, কারখানার দুষিত বর্জ্য খালের পানিতে ফেলার কারণে দূষণ হচ্ছে পানি। কৃষিকাজে এ পানি ব্যবহার করতে না পারায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার সাধারণ কৃষক। খালের পানিতে নামার সাথে সাথে শরীরের বিভিন্নস্থান ফুলে যায় এবং চুলকানি হয়ে ছোট ছোট গোটা হয়।

সোনারগাঁ জি আর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, অন্যান্য কাগজের কারখানার ফেলে দেওয়া পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত মন্ড ট্রাকে করে সকাল বেলা রাস্তার পাশে ফেলার কারণে উৎকট গন্ধে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

কারখানা মালিক জুলফিকার আলী জানান, আমি ষোলআনা কাগজপত্র ওকে করেই কারখানা চালু করেছি। তা ছাড়া রিসার্কেল প্লান্ট হওয়ায় কোনো রাসায়নিক ব্যবহার হয় না।

সোনারগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ চৌধুরী বলেন, রাসায়নিক মিশ্রণ আছে, এমন দূষিত বায়ুর সংস্পর্শে থাকলে চোখ, নাক বা গলার সংক্রমণ বা ক্ষতির কারণ হতে পারে। সেই সঙ্গে ফুসফুসের নানা জটিলতা, যেমন ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়া, মাথাব্যথা, অ্যাজমা এবং নানাবিধ অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি সেটা মস্তিষ্ক, লিভার বা কিডনির দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাও তৈরি করতে পারে। দূষিত পানি ব্যবহার চর্মরোগ, টাইফয়েড, জন্ডিস বা হেপাটাইটিসের মতো রোগ হতে পারে।

এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বি এম রুহুল আমিন রিমন জানান, বোর্ড মিলের ব্যাপারটি আমার জানা নেই। সরেজমিন গিয়ে তদন্তসাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top