Saturday , 28 September 2024
সংবাদ শিরোনাম

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘অত্যন্ত ইতিবাচক’ ও ‘প্রশংসনীয়’ বলে উল্লেখ করেছেনঃ শাহ আহমদ শফী

ধর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে যারা নোংরামি ছড়ায়, এটাকে চরিত্রের দোষ ও বিকৃত মানসিকতা বলে কঠোর সমালোচনা ও হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘অত্যন্ত ইতিবাচক’ ও ‘প্রশংসনীয়’ বলে উল্লেখ করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী। পহেলা বৈশাখে শেখ হাসিনার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আল্লামা শফী বলেন, ‘প্রধামন্ত্রীর এই বক্তব্যে ধর্মবিদ্বেষী ব্লগারদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন পাস করার হেফাজতের দাবির যৌক্তিকতা প্রমাণিত হয়েছে।’ রবিবার বিকেলে হেফাজতের আমিরের প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে হেফাজত আমির এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে হেফাজতের আমির আরও বলেন, ‘ইসলাম-বিদ্বেষী ব্লগাররা আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.) এবং পবিত্র ইসলামের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নোংরা ভাষায় কুৎসা রটিয়ে মুসলমানদের অন্তরে কতটা মারাত্মক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করছে, বিলম্বে হলেও প্রধানমন্ত্রী এটা বুঝতে পেরেছেন।’ হেফাজতের আমির আরও বলেন, ‘‘ধর্মবিদ্বেষী ব্লগাররা এ দেশের কোটি কোটি মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বিক্ষুব্ধ করে দেশের শান্তিশৃঙ্খলার জন্যে যে মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে এই বাস্তবতাও ফুটে উঠেছে। সেদিন প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছিলেন, ‘আমার ধর্ম সম্পর্কে কেউ যদি নোংরা কথা লেখে, সেটা কেন আমরা বরদাশত করব? ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু লিখলেই তারা মুক্তচিন্তার ধারক বলে দাবি করাটা যেন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আমি এখানে কোনো মুক্ত চিন্তা দেখি না। আমি দেখি নোংরামি।’” আল্লামা শফী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সেদিন বাংলাদেশের কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ের কথাই বলেছেন।’ বিবৃতিতে হেফাজতের আমির আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের আলেম সমাজ, মাদ্রাসা ছাত্র ও বিশাল মুসলিম জনগোষ্ঠী অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণের অধিকারী এবং আইন মেনে চলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। পশ্চিমা বিশ্বেও বাংলাদেশ সহনশীল মুসলিম-অধ্যুষিত দেশ বলে বারবার প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত কয়েক বছর থেকে কিছু বিপথগামী যুবক ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ও ব্লগে আল্লাহ, রাসূল ও ইসলামের বিরুদ্ধে জঘন্য ও প্রকাশ অযোগ্য ভাষায় অবমাননামূলক বক্তব্য ও উক্তি প্রচার করে বাংলাদেশের এই সৌহার্দ্যপূর্ণ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সুশৃঙ্খল সমাজব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আর এই দুষ্টচক্রকে নানাভাবে সহযোগিতা ও উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের উন্নতি ও অগ্রগতি সহ্য করতে না পারা দেশি-বিদেশি একটি ষড়যন্ত্রকারী মহল।’ বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘ধর্মের বিরুদ্ধে কুৎসা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার ভয়াবহ এই চক্রান্ত আঁচ করেই হেফাজতে ইসলাম ৩ বছর আগে থেকেই এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে বারবার সরকারের প্রতি আহ্বান এবং ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করেছে। যার অন্যতম দাবি ছিল, ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে কঠোর আইন পাস। আমাদের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হচ্ছিল যে, হেফাজতের আন্দোলন ও প্রতিবাদ ছিল মানুষে মানুষে সৌহার্দ্য ও সামাজিক শান্তিশৃঙ্খলা অক্ষুণ্ণ রেখে জনগণের ঐক্যকে আরও মজবুত করে দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই। প্রধানমন্ত্রী গত ১৪ এপ্রিল ইসলাম-বিদ্বেষী ব্লগারদের বিরুদ্ধে তার নিজস্ব মানসিক যন্ত্রণা ও ক্ষোভের যে প্রকাশ করেছেন, তাতে হেফাজতের দাবির যৌক্তিকতা জোরালোভাবে প্রমাণিত হয়েছে।’ বিবৃতিতে হেফাজত আমির বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান উপলব্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বিকৃত ও নোংরা মানসিকতার ধর্মবিদ্বেষী এসব দুষ্টচক্রকে দমন করার জন্যে অবিলম্বে ধর্ম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে কঠোর আইন পাসের জন্যে তার প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ, দেশের শান্তিশৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতার জন্যে এটা জরুরি। দেশে এ ধরনের কঠোর আইন ও আইনের প্রয়োগ থাকলে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী চরমপন্থার দিকে মানুষকে ঠেলে দেওয়ার কোনো সুযোগই পাবে না।’

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top