Friday , 1 November 2024
সংবাদ শিরোনাম

সুদহার কমিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি ঘোষণা

বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ দিতে ব্যাংকিং খাতে সুদহার কমিয়ে মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কনফারেন্স হলে চলতি অর্থ বছরের দ্বিতীয়ার্ধ্বের (জানুয়ারি-জুন ২০১৬) নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন গভর্নর ড. আতিউর রহমান। সুদহার দশমিক ৫০ শতাংশ কমিয়ে রেপোতে ছয় দশমিক ৭৫ এবং রিভার্স রেপোতে চার দশমিক ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

ঘোষিত নতুন মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ১ শতাংশ। এছাড়া নতুন এ নীতিতে আগামী জুন নাগাদ বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। বেসরকারি খাতের রফতানিমুখী শিল্পের জন্য বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত ৫০ কোটি ডলারের দুটি তহবিল থেকে ঋণ নেয়ার সুযোগ রাখার ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মুদ্রানীতি ঘোষণা করে ড. আতিউর রহমান বলেন, এবারে প্রথমত, আমরা মূদ্রানীতিতে সুদহার কমিয়েছি। বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রেপো এবং রিভার্স রেপো হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে যথাক্রমে ৬ দশমিক ৭৫ ও ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, ব্যাপক মুদ্রা ও বেসরকারি খাতের ঋণ যোগানের প্রবৃদ্ধি প্রক্ষেপিত হয়েছে যথাক্রমে ১৫ ও ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এই লক্ষ্যমাত্রা আগের মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সামান্য কম, তবে প্রকৃত অর্জনের চেয়ে যথেষ্ট বেশি।

তিনি আরো বলেন, ডিসেম্বর মাস শেষে খাদ্য ও জ্বালানি বহির্ভূত কোর মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ, যা মূল্যস্ফীতিকে ঊর্ধ্বমুখী চাপে রেখেছে। তাই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচকগুলো চলতি বছরের উচ্চ প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার পরিবেশেও আমাদের রফতানি বাড়ছে। বছর শেষে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে।

বৈদেশিক সূত্রের অর্থায়নসহ বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি জুনের ১৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে বেড়ে নভেম্বরে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। আমানত ও ঋণের সুদহার কমেছে এবং এ দুটি সুদহারের ব্যবধান অর্থাৎ স্প্রেড ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। তবে এই স্প্রেড আরো কমানোর জন্য ব্যাংকগুলোকে আমরা তাগিদ দিয়ে যাচ্ছি।

অভ্যন্তরীণ এবং বহির্বিশ্ব উভয় খাতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে ৬ দশমিক ৮ থেকে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং ৬ দশমিক ১ শতাংশ মূল্যস্ফীতি প্রক্ষেপণ করছে। তবে বর্তমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে অর্থবছর শেষে এই প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশও স্পর্শ করতে পারে।

এর আগে সর্বশেষ ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুদহার কমানো হয়েছিল। বিনিয়োগ বাড়াতে বেশ কিছুদিন ধরে সুদহার কমানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা।

বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ দিতে ব্যাংকিং খাতে সুদহার কমানোর সিদ্ধান্তের বিস্তারিত দিক তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

সম্প্রতি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি নীতিনির্ধারণী সুদহার কমানোর পরামর্শ দেয়। অবশ্য বেশ কিছুদিন ধরে ব্যাংকগুলোর সুদহার কমতির দিকে রয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর ঋণের গড় সুদহার নেমে এসেছে ১১ দশমিক ২৭ শতাংশে। এক বছর আগে যা ছিল ১২ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top