কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। পত্রিকাটির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাগুইআটি থানা পুলিশ জাল পাসপোর্ট চক্রের সাতজনকে আটক করেছে। এদের মধ্যে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের হাফিজ নামে এক ব্যক্তি রয়েছে। বৈষ্ণবঘাটা থেকে আটক হাফিজের সঙ্গে বাংলাদেশী জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীনের (হুজি) যোগসূত্রের প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে।
হাফিজের কাছ থেকে ১১টি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে। এসব পাসপোর্র্টের বেশির ভাগই উত্তর ভারতের ঠিকানার। এরমধ্যে একটি পাসপোর্টে সঞ্জীব কুমার নামে পাঞ্জাবের পাঠানকোটের এক বাসিন্দার নাম রয়েছে। এরপরেই মূলত পাঠানকোট হামলায় সঞ্জীব ও হাফিজ জড়িত কিনা সে বিষয়ে আইন-শৃংখলাবাহিনী ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে।
তদন্তকারীদের সন্দেহ, উত্তর ভারতের কোনো বড় চক্রের সঙ্গে হাফিজের যোগাযোগ আছে। চক্রটি জাল পাসপোর্ট তৈরির জন্য আসল পাসপোর্ট পাচার করে। ওইসব আসল পাসপোর্ট কীভাবে অপরাধীদের হাতে পৌঁছায় হাফিজকে এ নিয়ে জেরা করা হচ্ছে।
বিধাননগর পুলিশ জানিয়েছে, হাফিজ সাত বছর আগে মুর্শিদাবাদ হয়ে প্রথমে উত্তর ২৪ পরগনার গেদেতে বসবাস শুরু করে। প্রথমে মধ্যমগ্রাম এবং নেতাজিনগরের বৈষ্ণবঘাটা বাইলেনে উঠে।
তদন্ত কর্মকর্তারা বলেন, হাফিজ মূলত বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা লোকজনকে জাল পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়ে তাদের বিদেশযাত্রার ভিসারও ব্যবস্থা করে দিত। নিজের ভ্রমণ সংস্থার অফিসের আড়ালে চালাত ওই কারবার।
এক তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, হাফিজ বাংলাদেশীদের ভারতীয় পাসপোর্ট করে দিয়ে বিদেশে পাঠাত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাফিজ ধরা পড়ার পরেও জাল পাসপোর্ট তৈরির জন্য তার ফোনে বাংলাদেশ থেকে ফোন এসেছে বলে দাবি তদন্তকারীদের।
আনন্দবাজারে বলা হয়েছে, হাফিজের ডানহাত হয়ে নকল পাসপোর্ট তৈরির কাজ করত কেষ্টপুরের আদর্শ পল্লির শিমুলতলার বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন রানা ওরফে মামা। শিমুলতলায় যার পরিচয় জ্যোতিষী ও হস্তরেখাবিদ হিসেবে। গেরুয়া রঙের ঝাঁ-চকচকে দোতলা বাড়ির বাসিন্দা, সত্তর বছরের চিত্তরঞ্জনকে ‘মামা’ নামে অবশ্য পাড়ার লোকজন চেনেন না। চিত্তরঞ্জন নিজের চক্রের মধ্যেই ওই নামে পরিচিত বলেই জেনেছে পুলিশ। সেও বাংলাদেশী। ২০০৫ সালেও জাল পাসপোর্ট তৈরির চক্রের হোতা হিসেবে জেল খেটেছিল মামা।
আসল পাসপোর্টের যে অংশে পাসপোর্টধারীর নাম ও পরিচয় থাকে অপরাধীরা মূলত সে জায়গাটিই জাল করত বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা।