Friday , 1 November 2024
সংবাদ শিরোনাম

নাইকো দুর্নীতি মামলা: আদালতে খালেদা জিয়া

নাইকো দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলায় আত্মসমর্পণ করতে আদালতে গেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। সোমবার বেলা সোয়া ১২টায় বকশি বাজারের জজ আদালতে পৌঁছান তিনি। এর আগে বেলা সোয়া ১১টায় গুলশানের বাসা ‘ফিরাজা’ থেকে তার গাড়ি পুরান ঢাকার আদালত পাড়ার দিকে রওনা হয়।২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার সময় দুদকের করা এই মামলা বর্তমানে ঢাকার বিশেষ জজ আমিনুল ইসলামের আদালতে অভিযোগ গঠন পর্যায়ে রয়েছে।এদিকে খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা দিতে আসাকে কেন্দ্র করে আদালত ও এর আশেপাশে ব্যাপক নিরাপত্তাবলয় তৈরি করেছে আইনশৃংখলা বাহিনী।খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন যুগান্তরকে বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যেহেতু হাইকোর্ট দুমাসের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন, সে জন্যই আজ নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানাবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন।তিনি আরো বলেন, মঙ্গলবারই আমরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করব।বিএনপির এই যুগ্ম-মহাসচিব আরও বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে নাইকোর সঙ্গে চুক্তি করে। পরে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সেই চুক্তি চূড়ান্ত করেছেন রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে। এক্ষেত্রে খালেদা জিয়া ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন- এমন কোনো অভিযোগ এই মামলায় নেই। ওয়ান-ইলেভেনের সময় মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের জন্য একই ঘটনায় দুজনের বিরুদ্ধেই এই মামলা করা হয়েছিল। পরে শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে হাইকোর্ট এই মামলা বাতিল করলেও খালেদা জিয়ারটা বাতিল না করায় আপিল বিভাগে আপিল করা হবে।এদিকে খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে জজ কোর্ট এলাকার চারদিকে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে প্রবেশের একটি ফটক পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল থেকেই আদালত এলাকাজুড়ে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবের একাধিক দল তৎপর রয়েছে।নাইকো দুর্নীতি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার আবেদন ১৮ জুন খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার দুমাসের মধ্যে তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়।রিট খারিজের দিন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ফৌজদারি মামলা রিট আবেদনের মাধ্যমে বাতিল চাওয়া যায় না। এ কারণেই রিটটি খারিজ করা হয়েছে। এদিকে ৫ নভেম্বর এই রায়ের কপি নিম্ন আদালতে পৌঁছেছে বলে দুদক সূত্র জানায়।তিনটি গ্যাস ক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্রের ১০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতিসাধনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুদক। পরের বছরের ৫ মে খালেদাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২০০৮ সালের ৯ জুলাই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন এবং রুল জারি করেন। এরপর খালেদা জিয়ার আবেদন ১৮ জুন খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তার জামিন বাতিল করে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার দুমাসের মধ্যে তাকে নিু আদালতে আÍসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়।এদিকে নাইকোকে কাজ দিয়ে রাষ্ট্রের ক্ষতি করার অভিযোগে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও একই দিনে আরেকটি মামলা করেছিল দুদক। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর ২০১০ সালের মার্চে হাইকোর্ট ওই মামলা বাতিল করে দেন। রায়ে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে হয়রানি করার উদ্দেশেই মামলাটি করা হয়েছিল।খালেদা জিয়া ছাড়া এ মামলার বাকি আসামিরা হলেন- চারদলীয় জোট সরকারের আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া (সিলভার সেলিম) এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top