Saturday , 6 July 2024
সংবাদ শিরোনাম

চট্টগ্রামে ডাবল মার্ডার মামলা অধিকতর তদন্তের নির্দেশ

চট্টগ্রামের সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং (সিআরবি) এলাকায় ২০১৩ সালের ২৪ জুন সংঘটিত জোড়া খুনের মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দিয়ে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম নওরীন আক্তার কাকন এ আদেশ দেন।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আতিক আহমেদ চৌধুরী সোমবার বিকালে প্রসিকিউশনের কাছে এ চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে সাবেক সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও বর্তমান সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী ছাত্রলীগের সাইফুল আলম লিমনকে আসামি করা হয়েছে। চার্জশিটে এ দু’জনসহ ৬২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, রেলওয়ের এক কোটি দশ লাখ টাকার টেন্ডার নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল বাবর ও লিমন গ্রুপ। এতে বাবর অনুসারী যুবলীগ কর্মী সাজু পালিত ও আরমান হোসেন নামে এক শিশু নিহত হয়। ঘটনার পরপর বাবর ও লিমনকে নিজ নিজ সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।২০১৩ সালের ২৪ জুন চট্টগ্রামের সিআরবি (সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং) এলাকায় বাবর ও লিমন গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে যুবলীগ কর্মী সাজু পালিত (২৮) ও আট বছরের শিশু আরমান নিহত হয়। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানার এসআই মহিবুর রহমান বাদী হয়ে বাবর ও লিমনসহ ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮৭ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩০-৪০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় দুই গ্রুপের দুই প্রধান বাবর-লিমনসহ এজাহারভুক্ত একাধিক আসামিকে বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হয়। যদিও স্বল্প সময়ের মধ্যে হাইকোর্ট থেকে দু’জনই জামিন নিয়ে বের হয়ে আসেন।পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডাবল মার্ডার মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন কোতোয়ালি থানার এসআই কামরুজ্জামান। তিনি বাবর ও লিমনের জড়িত থাকার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পান। কিন্তু চার্জশিটে এ দু’জনের নাম অন্তর্ভুক্ত না করার জন্য পুলিশের ওপর নানামুখী রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হয়। যে কারণে আড়াই বছরেও চার্জশিট দিতে পারেননি প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরই মধ্যে চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্তভার দেয়া হয় নগর গোয়েন্দা পুলিশকে। এখানে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম। তিনিও চার্জশিটে বাবর-লিমনের নাম রাখা না রাখা নিয়ে চাপের শিকার হন। শেষ পর্যন্ত নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আতিক আহমদ চৌধুরী ওই দু’জনকেই আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেছেন।চার্জশিটে যা আছে : সূত্র জানায়, নগর গোয়েন্দা পুলিশের চূড়ান্ত করা অভিযোগপত্রে ৬২ জন আসামির মধ্যে শাহ আলম নামে একজন এজাহারবহির্ভূত আসামি রয়েছেন। অপর ৬১ জনের নাম মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে। এজাহারে ৮৭ জনের নাম থাকলেও তদন্তে সাক্ষ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় ২৬ জনকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য আদালতের কাছে সুপারিশ করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামির মধ্যে পলাতক আছেন ১২ জন। গ্রেফতার হয়ে জামিনে আছেন ৪৮ জন। সম্প্রতি যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন অমিত মুহুরি ও শিমুল প্রসাদ নামে দুই আসামি।একই সঙ্গে অভিযোগপত্রে ৩৭ জনকে ঘটনার সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।সূত্র জানায়, এর আগে বাবর-লিমন দু’জনকে বাদ দিয়েই ডাবল মার্ডার মামলার চার্জশিট চূড়ান্ত হয়েছে- এমন তথ্যে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে আবারও সিআরবিতে দুই গ্রুপ মাঠে নামে। একাধিকবার জড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জোড়া খুনের মামলা নিয়ে তদবির অনেকটাই থেমে যায়। যার সুবাদে পুলিশ আলোচিত দুই যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাকে আসামি করেই শেষ পর্যন্ত চার্জশিট দাখিল করতে সক্ষম হয়েছে।এদিকে ডাবল মার্ডার মামলার অন্যতম আসামি ও ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা সাইফুল আলম লিমনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নগরীর এনায়েত বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top